অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন : পিএইচডি প্রোগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন এইবারই প্রথম দেখলাম প্রথম আলোতে ফলাও করে প্রকাশিত হতে। মনে হচ্ছে সূর্য সত্যি সত্যিই উদয় হয়েছে এবং আলো সত্যি সত্যিই ছড়িয়েছে। একটি শক্তিশালী পিএইচডি প্রোগ্রামই পারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মানকে উন্নত করতে। প্রশ্ন হলো শক্তিশালী পিএইচডি প্রোগ্রাম বলতে কি বুঝি? পিএইচডি যারা করবে তারা ইতোমধ্যেই মাস্টার্স সম্পন্ন করে ফেলেছে। এই সময়ে বাবা-মায়েরা আশা করে সন্তান চাকরি করবে। শিক্ষার্থী এই সময় বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতে চায় না আর বাবা মায়েরাও দিতে পারে না। তাই ন্যূনতম একজন প্রভাষকের বেতনের সমান মানের একটা ফেলোশিপ দিতে হবে। অনেকে আবার বিবাহিত হতে পারে। বিবাহিত হউক বা না হউক তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বিবাহিত হলে স্ত্রী নিয়ে থাকার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যেই শিক্ষক সুপারভাইজর হবেন তার অধীনে একজন পোস্ট-ডক নিয়োগ দিলে পিএইচডি প্রোগ্রামটা ভালো হবে। এই পোস্ট-ডক ফেলোশিপের মানও আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। পিএইচডি-র কাজের মূল্যায়নের জন্য আন্তর্জাতিক মানের এক্সটার্নাল নিয়োগ দিতে হবে। এই বিজ্ঞাপনে যেইটা ভালো লাগেনি সেটা হলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি লিখিতভাবে বিমাতাসুলভ আচরণ। এইরকম বর্ণবাদী আচরণ কী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানায়? বিদ্যমান নিয়মেই আছে যেই শিক্ষক পিএইচডি করাবেন সেই শিক্ষক, যেই বিভাগে পিএইচডি করবে সেই বিভাগের একাডেমিক কমিটি এবং সেই অনুষদের পিএইচডি কমিটি মূল্যায়ন করবে। তার জন্য পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির আগে তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ডিগ্রিধারীদের আবেদনপত্র সংগ্রহের আগে অর্জিত ডিগ্রির সমতা নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে দরখাস্ত করতে হবে। এই দুটি নিয়ম কি দরকার ছিলো? অযথা সমস্যা ডেকে আনি কেন? বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো এখন বেশ ভালো করছে। আগ্রহীরাতো বাংলাদেশেরই। তারা অনার্সের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পায়নি বলে তার মাসুল দেওয়া কি শেষ হবে না? লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়