সুজন কৈরী: কুমিল্লায় আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার আসামি শাহাজালাল ওরফে জালালকে (২৮) গত ১৩ জুলাই কুমিল্লার চৌয়ারা পুরাতন বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সংস্থাটি বলছে, ২০১৫ সালের ৯ মার্চ আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ ও রিফাতের (২০) মরদেহ তার বাড়ি থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে ধনপুর গ্রামের সোনাইছড়ি গাংয়ের উত্তর পাশের পানিতে মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঞটনায় নিহতের মা জোৎস্না বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে সদর দক্ষিন থানায় মামলা (নং-১৪) দায়ের করেন।
মামলাটি সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ প্রায় ১১ মাস তদন্ত করে এবং পরে মামলাটি সিআইডি কুমিল্লার উপর অর্পিত হয়। সিআইডি কুমিল্লা দীর্ঘদিন তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। তবে মামলার বাদি না-রাজীর আবেদন করলে আদালত মামলাটি পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম জেলা প্রধান পিবিআই কুমিল্লাকে নির্দেশ দেন।
এরপর পিবিআই’র ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই কুমিল্লা জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের সর্বিক সহযোগিতায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেলের পরিচালনায় মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ মামলাটি তদন্ত করেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানিয়েছে, গ্রেপ্তার শাহজালাল জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের মার্চ মাসের কোনো একদিন রাতের বেলা তার পার্শবর্তী এলাকার পরিচিত বন্ধু নাসির উদ্দীন তার কাছে একটি মোটর সাইকেল নিয়ে আসে সীমান্তের ওপারে পাঠানোর জন্য। মোটর সাইকেলটি কার জানতে চাইলে নাসির জানান, তিনি এবং রানা রিফাতকে মেরে মোটর সাইকেলটি নিয়ে আসছে। পরে শাহাজালাল মোটর সাইকেলটি ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার জামাল নামক এক ব্যক্তির কাছে দিয়ে পরে টাকা দিবে বলে জানান। এরপর টাকা চাইতে গেলে জামাল জানায় এটি মার্ডারের হোন্ডা টাকা দেওয়া যাবে না। তারপর জামাল এসে নাসিরের কাছে এসে মূল ঘটনা জানতে পারে যে, ভিকটিম রিফাতকে নাসির এবং রানা মিলে তাকে গলা থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে মরদেহ সোনাইছড়ি গাংয়ের পানিতে ফেলে হোন্ডাটি নিয়ে যায়।
পিবিআই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই হত্যা মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে থানা পুলিশ এবং সিআইডি তদন্ত করেছে। এটি একটি ক্লুলেস হত্যা মামলা। গোপন তথ্যে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। এরপর তদন্তে মামলার প্রকৃত রহস্য উৎঘাটিত হবে। গ্রেপ্তার আসামি নিজেকে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।