সুস্থির সরকার: [২] জেমসন দাস নামে একজন তার নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ১৪ জুলাই রাতে একটি পোস্ট দেন।যেখানে নেত্রকোণা জেলার মোহগঞ্জ উপজেলার আদর্শনগর এলাকার কয়েকটি গ্রামের বাশ-বেত শিল্পীদের জীবন ও কর্ম তোলে ধরেন। মূহূর্তের মধ্যে তার পোস্টটি যথেষ্ট সারা ফেলে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান পোস্টটিতে কমেন্টস করেন।
[৩] পোস্টটি ছিল এমন যে, ৬ নং সুয়াইর ইউনিয়ন, মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা এর অন্তর্গত কান্দিপাড়া গ্রাম। ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি এই গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরের নারী পূরুষ সবাই শিল্পী। বাঁশ দিয়ে মৌসুম অনুযায়ী নানান ধরনের গৃহস্থালি সামগ্রী তৈরি করেন। সপ্তাহে যা তৈরী হয়, তা মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট আদর্শনগর বাজারে বিক্রি করেন। একই দিনে বাজার থেকে বাঁশ কিনে আনেন পরবর্তী সপ্তাহের জন্য। এখন প্রতিটি বাড়ির চাষ যোগ্য জমিও রয়েছে। বছরে দু'বার ধান চাষও করেন। চাষের ধান মজুত করে, বেশী দাম হলে বিক্রি করেন। ধান বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা ও সাংসারিক অতিপ্রয়োজনীয় কাজ করেন। উদ্বৃত টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করেন। এই গ্রামের প্রতিটি মানুষই বেশ পরিশ্রমি। অন্যান্য গ্রামের লোকদের মত আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করেন না।
[৪] ইতোমধ্যে বেশ ক'জন ছেলে মেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা সমাপ্ত করেছে। ক'জন পুলিশ ও সেনা সদস্যও আছে। শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা অন্যদের পড়াশোনায় উৎসাহীত করছে। ১০০/১৫০ পরিবার হবে ঐ গ্রামে। ১০/১২টি পরিবার বাদে সবাই বাঁশ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। প্রতি সপ্তাহে টুকটাক কাজ করলেও ১০০০/১২০০ টাকা ইনকাম করতে পারেন। তাতে নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ চলেই যায়। প্রায় সারা বছরই এ কাজ করেন। উন্নত ট্রেনিং পেলে কান্দিপাড়া গ্রামের বাঁশ শিল্পকে বিশ্বমানের করা সম্ভব। অন্যান্য গ্রামের বেকার লোকজন হতাশায় নিমজ্জিত না থেকে বাঁশ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েও স্বাবলম্বী হতে পারেন।
[৫] তার এই পোস্টকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদুল হাসান মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানকে বিষয়টি অবহিত করেন। ফলশ্রুতিতে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: নুরুজ্জামনান ১৫ জুলাই দুপুরের দিকে বাশ-বেত শিল্পীদের অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, ১৮-৩৫ বছর বয়সী সকল নারী পুরুষদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঋণ সুবিধা দিয়ে তাদের এই কার্যক্রমকে আরও বেগবান করা হবে।