শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২১, ০৩:২৭ রাত
আপডেট : ১১ জুলাই, ২০২১, ০৩:২৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মরিশাসে কাজে গিয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি নারী, দেশে ফিরে মামলা

নিউজ ডেস্ক: পূর্ব আফ্রিকার দেশ মরিশাসে কাজের জন্য গিয়েছিলেন বাংলাদেশি এক নারী। সেখানে একাধিকবার মালিকের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হন তিনি। শনিবার (১০ জুলাই) বিকেলে তিনি রামপুরা থানায় মানবপাচার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পৃথক ধারায় মামলা করেছেন। এর আগে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে সাহায্য চেয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। ওই নারীর অভিযোগ, আসামিরা তাঁকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে।

মামলা সূত্রে এবং ওই নারীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মরিশাসে পৌঁছান। ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইল কোম্পানিতে হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। তবে ঠিকমতো বেতন দেওয়া হতো না। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ক্যানটিন পরিচালনা করেন বাংলাদেশি মোহাম্মদ শাহ আলম (৪৩)। তাঁর বাড়ি ফেনী। এই শাহ আলম এবং তাঁর সহযোগী ফুরকান, সিদ্দিক ও আসলাম একদিন ওই নারীকে বলেন, কোম্পানির মালিক তাঁকে পছন্দ করেন। মালিকের সঙ্গে থাকলে তাঁর লাভ হবে। এমন প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। কিন্তু এরপর থেকে শাহ আলম ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেন। একদিন বলেন, মালিকের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গেছে। মালিকের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এই বলে তাঁকে ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলের মালিক অনিল কোহলির বাসায় নিয়ে যান শাহ আলম। মালিকের কক্ষে তাঁকে রেখে তিনি চলে যান। আর সেদিনই কোম্পানির মালিক তাঁকে ধর্ষণ করেন।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, এরপর সেই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে শাহ আলম ও কোম্পানির মালিক তাঁকে প্রায়ই ধর্ষণ করতেন। একদিন শাহ আলম তাঁকে মালিকের বন্ধুর সঙ্গে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে রাজি না হলে আবার নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে মরিশাসের একটি হাসপাতালে গর্ভপাত করান। এরপর তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর শর্তে তাঁর বাবাকে মরিশাসে আনার কথা বলা হয়।

ওই নারী জানান, এর আগে তাঁর বাবা বিদেশে কাজের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স গোলাম রাব্বি ইন্টারন্যাশনালে (আর. এল-১০৭৮) গেলে বয়স বেশি বলে তাঁকে অযোগ্য বলা হয়। এর পরিবর্তে মেয়েকে মরিশাস পাঠানোর পরামর্শ দেয়। ২৮ হাজার টাকা মাসিক বেতনের কথা বলে আরেকটি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স এম আক্তার অ্যান্ড সন্সের মাধ্যমে তাঁকে মরিশাসে পাঠানো হয়। নির্যাতনের ঘটনার পর কোনো অভিযোগ না করার শর্তে গত বছরের নভেম্বরে তাঁর বাবাকে মরিশাসের ওই কোম্পানিতে আনা হয় এবং তাঁকে দেশে পাঠানোর কথা বলা হয়। বাবা সেখানে পৌঁছানোর পর শাহ আলম তাঁকে বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়ে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর অসুস্থ অবস্থায় দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন। দেশে এসে অভিযোগ করার পর মরিশাসে তাঁর বাবাকেও নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে। নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।

দেশে ফেরার তিন দিনের মাথায় রাতের অন্ধকারে আত্মহত্যার করার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানান ওই নারী। কিন্তু তাঁর বোন দেখে ফেলে তাঁকে নিবৃত্ত করেন। বড় বোনকে সব খুলে বলেন। এরপর তাঁরা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাঁকে চিকিৎসাসহ কাউন্সেলিং সহায়তা দেওয়া হয়।

ওই নারীর দাবি, মরিশাসের ওই কোম্পানিতে ৬ শরও বেশি বাংলাদেশি নারী কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে পছন্দের নারীদের টার্গেট করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেন শাহ আলম, ফুরকান, সিদ্দিক ও আসলাম। ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলের মালিক অনিল কোহলি প্রায়ই নারীদের নিপীড়ন করেন।

বাংলাদেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনে এই খবর প্রকাশের পর মরিশাসের কয়েকটি গণমাধ্যমও সংবাদটি প্রকাশ করে। এরপর অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের নানাভাবে সমঝোতার প্রস্তাব দিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবরে জানানো হয়েছে।

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান এ ব্যাপারে বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী যে বর্ণনা দিয়েছেন তা ভয়াবহ। বিদেশে কাজের কথা বলে কাউকে যৌন নিপীড়ন করা বা দেহ ব্যবসায় বাধ্য করানো মানবপাচারের মধ্যে পড়ে। মরিশাস এবং বাংলাদেশ সরকারের উচিত যৌথভাবে এই ঘটনার তদন্ত করা। আশা করছি, মন্ত্রণালয় ও দূতাবাস এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে। - আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়