সুজন কৈরী: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড কারখানা ভবনে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অনুমোদন ছিল না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার বিকেলে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর সাংবাদিকদের ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) দেবাশীষ বর্ধন বলেন, ফায়ার সার্ভিস থেকে প্রতিটি কারখানার ভবনের জন্য ফায়ার সেফটি প্ল্যানের একটি অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু ভবনটির নকশা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের অনুমোদন ছিল না। রাজউকের ছাড়পত্র, কারখানা অনুমোদনের ছাড়পত্র, পরিবেশের ছাড়পত্র নিয়েছিল কি-না, তা আমাদের জানা নেই।
তিনি বলেন, প্রতিটি শিফটে ৩০০ থেকে ৪০০ ফায়ার ফাইটার কাজ করেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত তাপ সহ্য করেও ফায়ার ফাইটাররা প্রথম রাত থেকেই ভেতরে ঢুকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে। কারখানায় অনেক দাহ্য পদার্থ ছিল। শুক্রবার চতুর্থ তলা থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর হাসপাতালে তিনজনের মরদেহ গিয়েছিল। মোট ৫২ জন ছাড়া আর কোনোও মরদেহ আমরা পাইনি। ভেতরেও আর কোনো মরদেহ নেই। এছাড়াও ঘটনার দিন ৫২ জনকে টিটিএল লেডার দিয়ে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগার বিষয়ে দেবাশীষ বর্ধন বলেন, কারখানার আগুনটি ছিল হার্ড ফায়ার। ভবনটিতে একাধিক সমস্যা রয়েছে। ভবনের প্রত্যেক ফ্লোরে নেট দিয়ে ব্যারিকেড ছিল। আবার কিছু কিছু জায়গায় তালাবদ্ধ ছিল। এরমধ্যেও আমরা কাজ করেছি। কারখানাটিতে একাধিক খাদ্য পণ্য তৈরি হত। এগুলো প্যাকিং করার জন্য ফয়েল পেপার, প্লাস্টিকের বোতল, নিচতলায় ছিল টন টন প্যাকিং কাগজের রোল। এসব দাহ্য পদার্থ থেকে আগুন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। আমরা একদিকে পানি দিলে অন্যদিকে আগুন ছড়িয়ে যায়। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ও ক্যামিকেল থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লাগে।
অগুনের সূত্রপাতের বিষয়ে তিনি জানান, একাধিক তদন্ত কমিটি হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, ভবনের দুর্বলতা ও কারখানায় আগুন নির্বাপণের যথেষ্ট সরঞ্জাম ছিল কি-না, সবকিছু তদন্তের পর বলা যাবে।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, পাঁচতলার ফ্লোর ধ্বসে পড়েছে। ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বুয়েট থেকে বিশেষজ্ঞ এসে তারা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার পর পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :