মারুফ কামাল খান: হেন করেছি, তেন করেছি কিংবা হেন করেঙ্গা, তেন করেঙ্গা এগুলো সব বাকোয়াজ। শুনতে চাই না। সারা দুনিয়ার দুয়ার এখন খোলা। মানুষেরও চোখ-কান খোলা। এই যে কোভিড-১৯ নামের মহামারী বা অতিমারী, দুনিয়ার বিভিন্ন সরকার এই হুমকি মোকাবেলায় সব চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে কোন কাজটা করছে? দুনিয়াজুড়ে সরকারগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বা প্রধান কাজটাইবা এখন কী?
টিকা দেওয়া। নাগরিকদের গায়ে করোনা প্রতিশেধক ভ্যাক্সিন ঢুকিয়ে দেওয়া। এটাই কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সবচেয়ে প্রধান ও বড় কর্তব্য। এ দায়িত্বটা সরকারের। লকডাইন, শাটডাউন দিয়ে পাবলিককে কতোদিন ঘরে আটকে রাখবেন? জনগণ কথা শোনে না- এই ব্লেইম দিয়ে আর কতো পার পেতে চান?
বাংলাদেশের সরকারের লোকেরা যতো বকোয়াজই করুক, টিকা জোগাড় ও টিকা দেওয়ার আসল কাজটাই তারা করতে পারেনি। টিকা আনা নিয়ে ঢাকঢাক গুড়গুড়, কমিশন বাণিজ্য ও টাকা মেরে খাওয়া নিয়েই তারা ছিল ব্যতিব্যস্ত। টিকা আনার চাইতে মাল কামানো ছিল তাদের মূল ধান্দা। সেই মাল তারা ঠিকই কামিয়েছেন। পাবলিক এক্সচেকার-এর বা জনগণের টাকা গচ্ছা দিয়েছেন, লেকিন টিকা আসেনি। তারা যে ইন্ডিয়াকে জানের জিগরি দোস্ত বলে পরিচয় দেয় কথায় কথায়, তারাই প্রতারণা করেছে। চুক্তি করে, টাকা নিয়েও সময়মতো টিকা দেয়নি। কবে দেবে, আদৌ দেবে কিনা তাও পুরা অনিশ্চিত। এ নিয়ে সরকার একটা কথাও কয় না। এতো অযোগ্যতা এবং বাগাড়াম্বর অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এখন নানান দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ভিক্ষা হিসেবে যেসব টিকা আসছে, সেগুলোর কথা প্রচার করে নির্লজ্জ বাগাড়ম্বর করছে সরকারি চামচারা।
শোনেন, টিকার এসব টুকটাক খয়রাতি চালানে কাজ হবে না। দেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ লোক এখনো টিকা নিতে পারেনি। তাদের টিকা দিতে হবে। কাজেই দুনিয়ার যেখান থেকে হোক টিকা আনেন। মানুষ বাঁচাতে এর বিকল্প নেই।
চুরি, দুর্নীতি, লুট, কমিশন খাওয়া থেকে বিরত হবেন না, জানি। এটা আপনাদের অভ্যাস ও স্বভাব হয়ে গেছে তাও জানি। যেখানে কোনো জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নেই সেখানে তসরুপই স্বাভাবিক। কাজেই লুটপাট যা করার করেন, কিন্তু টিকা আনান। জলদি করেন। কোটি কোটি ডোজ টিকা লাগবে। বসে থেকে বড়ো বড়ো বুলি না ঝেড়ে সর্বাত্মক চেষ্টায় এই একটা কাজ অন্তত করুন দেখি।
আমাদের মতন সাধারণ নাগরিকের দাবি করার, আরজি পেশ করার এবং চিৎকার দেওয়ার আর কোনো মঞ্চ তো এখন নেই। তাই ফেসবুকেই বলি। সব ছেড়ে সবার আগে টিকা আনুন, টিকা, আনান, টিকার বন্দোবস্ত করেন এবং শিগগির করেন, জলদি করেন, অবিলম্বে করেন। ফেসবুক থেকে