আকতার বানু আলপনা: সাংসারিক কাজের চাপে গত প্রায় এক মাস ধরে আমি সিরিয়াস কিছু লিখতে পারিনি। সারা দিনে মাত্র একটা মিনিটও আমি বের করতে পারিনি, যখন একটু নিশ্চিন্ত হয়ে বসে কিছু একটা নিয়ে গভীরভাবে ভাববো বা কিছু একটা পড়বো। অথচ আমার মাথার মধ্যে অনেকগুলো এলোমেলো আইডিয়া প্রতিনিয়ত ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকগুলো অফিসিয়াল এবং একাডেমিক কাজ জমে আছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, আমার বাড়িতে আমার কাজে সহায়তা করার জন্য দু’দুজন কাজের লোক আছে (একজন ছুটা, একজন রাতদিনের)। তবু সময় পাইনি শুনে আপনারা নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন, তাই না? অবাক হবেন না। আমরা যারা কাজের লোককে দিয়ে কাজ করাই, তারা জানি যে, বাড়িতে একশটা কাজের সহায়তাকারী থাকলেও আপনি নিজে না নড়লে কোনো কিছুই ঠিকঠাকমতো হয় না। ট্রাস্ট মি! কোনো কিছুউউউই ঠিকঠাকমতো হয় না! কোনো একটা কাজও নয়।
মোর্যাল অব দ্য স্টোরি : সারা পৃথিবীতে সাংসারিক কাজ, পরিবারের লোকেদের দেখাশোনা এবং সন্তান লালনপালন করা ছাড়া আর সবক্ষেত্রে (লেখালেখি, গবেষণা, খেলাধুলা বা সৃষ্টিশীল যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে) পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদান অনেক কম। এর কারণ হলো, সাংসারিক নানা দায়-দায়িত্ব পালন করার পর মেয়েদের হাতে সময়, এনার্জি, সুযোগÑ এসব কম থাকে। তাছাড়া সিরিয়াস কোনো সৃষ্টিশীল কাজ করার জন্য যে একান্ত মনোযোগ, ধৈর্য, পরিবারের সবার সহযোগিতা-স্বীকৃতি এবং অখণ্ড ও কিছুটা দীর্ঘ অবসরের দরকার পড়ে, মেয়েরা সেসব কোনো কিছুই পায় না বা পেলেও খুবই কম পায়। ফলে ধীরস্থির ভাবে কোনোকিছু করার চেষ্টা এবং ইচ্ছা, কোনোটাই মেয়েরা ঠিকমতো জুটিয়ে উঠতে পারে না। না হলে আমিও বিশ^বিখ্যাত কিছু একটা হতেই পারতাম। আফসোস!
(পুনশ্চ : পুরুষরা বাইরে কাজ করে বাড়িতে এসে আরাম করতে পারে। আর নারীরা, হোক সে কর্মজীবি বা গৃহিনী, তার ডিউটি হলো চব্বিশ ঘণ্টা। কারণ ঘুমের মধ্যেও তাদের সংসারের নানা কাজের কথা, পরিবারের লোকেদের যত্নের কথা ভাবতে হয়!) ফেসবুক থেকে