শাহীন খন্দকার: [২] আইসিডিডিআর,বি, ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল-এর যৌথ সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশের প্রবীণ ব্যক্তিদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ব্যাপকতা: জাতীয় সমীক্ষার ফলাফল’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়। বুধবার ( ৩০ জুন) ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে এবং আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এবং ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
[৩] ওয়েবিনারের সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। ওয়েবিনারে জানানো হয়, দেশের ৭টি বিভাগে ২০১৯ সালে আইসিডিডিআর,বি এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স শহর ও গ্রাম মিলিয়ে দুই হাজার ৭৯৬ জন ষাটোর্ধ্ব মানুষের ওপর এই জরিপ চালায়। সেখানে দেখা যায়, নারীদের মধ্যে সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় ডিমেনশিয়ার প্রকোপ শতকরা ২ দশমিক ৫ গুণ বেশি।
[৪] গবেষণায় অন্যান্য বিভাগের তুলনায় রাজশাহীতে ১৫ শতাংশ এবং রংপুরে ১২ শতাংশ ডিমেনশিয়ার প্রকোপ বেশি। একইসঙ্গে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে যারা কখনও স্কুলে যাননি এবং যাদের স্ত্রী বা স্বামী নেই সামগ্রিকভাবে ডিমেনশিয়ার প্রকোপ তাদের মধ্যে অন্যদের চেয়ে বেশি দেখা গেছে। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অর্ধেকেরও বেশি হাইপারটেনশন (৫২ শতাংশ), হতাশা (৫৪ শতাংশ), এবং ডায়াবেটিস (৮ শতাংশ) সহ এক বা একাধিক দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা (মাল্টিমর্বিডিটি) ছিল। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি পুষ্টির অভাব (৩৫ শতাংশ কম ওজন), স্বল্প শারীরিক ক্রিয়াকলাপ (৪৯ শতাংশ), উচ্চমাত্রায় লবণ গ্রহণ (৫৬ শতাংশ) এবং উচ্চমাত্রায় তামাক সেবন (৭৬.৬ শতাংশ) করতে দেখা গেছে যা সাধারণত নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ বা এনসিডি ঝুঁকির কারণ।
[৫] সমীক্ষায় অনুমান করা হয়, ২০২০ সালে বাংলাদেশে মোট ডিমেনশিয়া রোগের সংখ্যা ছিল ১.১ মিলিয়ন। তাদের মধ্যে ০.২৮ মিলিয়ন পুরুষ এবং ০.৮৮ মিলিয়ন নারী। একইসঙ্গে গবেষণায়, ২০২৫ সালে এই সংখ্যাটি ১.৩৭ মিলিয়ন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে এটি দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ার (২.৪ মিলিয়ন) আশঙ্কা দেখা গেছে। যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গবেষণায় সুপারিশ করা হয়েছে, বয়স্ক ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বাংলাদেশের পরিবার, সমাজ, বেসরকারি এবং সরকারি পর্যায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক। পাশাপাশি এদেশে একটি উদ্ভাবনী স্থানীয় প্রমাণভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে ডিমেনশিয়ার প্রকোপ কমানো যাবে। সম্পাদনা: মেহেদী হাসান
আপনার মতামত লিখুন :