আসিফুজ্জামান পৃথিল: [২]এই সমস্যা সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে শান্তি ও গণতন্ত্র আনা কার্যত সম্ভব নয়: মর্ডান ডিপ্লোমেসি। [৩] সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের পরিস্থিতি শিরোনামে একটি রেজ্যুলেশন পাস হয়েছে। ১১৯টি দেশ এরপক্ষে ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট এসেছে একটি। ৩৬টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিলো। এই ৩৬টি দেশের একটি বড় অংশ ওআইসির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তারা ভোট দেননি কারণ এই রেজ্যুলেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি শব্দও ছিলো না।
[৪] বাংলাদেশের ভোট না দেওয়া নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু বাংলাদেশ স্পষ্ট করে জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে কোনও কার্যকর কর্মপদ্ধতি না থাকলে তারা এই ধরণের রেজ্যুলেশনের পক্ষে থাকবে না। ৩৭টি দেশ ভেটে উপস্থিতই ছিলো না। এগুলো অবশ্য অধিকাংশই আফ্রিকান দেশ, যাদের সঙ্গে মিয়ানমারের ভূ-অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্ষীণ।
[৫] কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়াও এতে ভোট দেয়নি ওআইসি’র সদস্য আলজেরিয়া, মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান, সৌদি আরব ও আরব আমিরাত। ভোট দেয়নি আসিয়ান ও সার্কের সদস্য থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাও। ভোট দেয়নি রাশিয়া ও চীনও। এই দেশগুলোর আলাদা রাজনৈতিক স্বার্থ আছে। তবে বাংলাদেশ ও ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর প্রধান স্বার্থ রোহিঙ্গা ইস্যুতে।
[৬] মিয়ানমারে স্থিতিমরিতা বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরী। বাংলাপেিদশ সেটি চায়ও। তবে রোহিঙ্গা সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে নয়। বাংলাদেশের দাবি অত্যন্ত শক্তিশালী। চাইলেও এই দাবিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই জাতিসংঘের।
[৭] তুরস্কের প্রতিনীধি ও সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট এই ব্যাপারে বলেছেন, এটি কোনওভাবেই শুধু মিয়ানমারের বাসিন্দাদের একক সমস্যা নয়। বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় দেশটিকে এক অন্ধকার সময় পার করতে হচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে কোনওভাবেই মিয়ানমারে শান্তি আনা সম্ভব নয়। ইরান জানায়, রোহিঙ্গাদের মর্যাদা আসা না পর্যন্ত তারা এই ইস্যুতে ভোট দেবে না। মিসর বলছে, এই ভোটে মিয়ানমার সঙ্কট আর রোহিঙ্গাদের মধ্যে আন্ত:যোগাযোগ সুস্পষ্ট নয়।
[৮] মর্ডান ডিপ্লোমেসির মতে, রোহিঙ্গা সমস্যাকে অবহেলা করে পশ্চিমা দেশগুলো জান্তা সরকারের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়।বিশেষত তারা এই রেজ্যুলেশনে ঐতিহাসিকভাবে মিয়ানমারের জান্তাদের সমর্থন করা দেশগুলোকেও পাশে পেতে চেয়েছিলেন। এ কারণেই উঠে আসেনি রোহিঙ্গাদের নাম।