শিমুল মাহমুদ, জেরিন আহমেদ: [২] বাংলাদেশে এখন গড়ে প্রতি পাঁচ জনে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। এই আক্রান্তের হার সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ৪০-৬৫ শতাংশ, যার ৮৬ শতাংশ সংক্রমণই হচ্ছে ভারতের অতিসংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে। সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুও বাড়ছে দ্রুত গতিতে। রোববার কোভিডে মৃত্যু হয়েছে আরো ১১৯ জনের, যা একদিনে বাংলাদেশে সর্বোচ্ছ। এরআগে গত ১৯ এপ্রিল এক দিনে ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
[৩] রোববার একই সময়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও পাঁচ হাজার ২৬৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন আট লাখ ৮৮ হাজার ৪০৬ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাড়িয়েছে ২১ দশমিক ৫৯ শতাংশে।
[৪] রোববার ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৬৪৮ জন । ময়মনসিংহে ২৭১ জন, চট্টগ্রামে ৪৮৯ জন, রাজশাহীতে ৯৬২ জন, রংপুরে ৪৪৭ জন, খুলনায় ১২০২ জন, বরিশালে ১৫০ জন আর সিলেট বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ৯৯ জন। আর খুলনা বিভাগেই মারা গেছেন ৩২ জন; ঢাকায় ২৪ জন এবং রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগে ২২ জন।
[৫] যুক্তরাজ্য শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এত তাড়াতাড়ি পৃথিবী ছেড়ে যাচ্ছে না। আগামী বছরেও থাকবে এই মহামারি এবং একটি ঢেউয়ের পর আরেকটি ঢেউ আসবে কয়েক মাস পরপরই। লকডাউন দিয়ে হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য সংক্রমণ কমানো যায়। কিন্তু, এটা কোনো দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নয়। মহামারি থেকে বের হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে যত দ্রুতসম্ভব দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। যেহেতু টিকার স্বল্পতার কারণে এই বছরই এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়, তাই উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিতে হবে। এতে করে এই মহামারিতে অনেক জীবন বেঁচে যাবে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ঘরবন্দি থাকার বিকল্প নেই। নিজের ও অপরের জীবন রক্ষার্থে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন অবশ্যই মেনে চলতে হবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘ফিল্ড হাসপাতাল’ প্রস্তুত রাখার প্রয়োজন।
[৬] জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বে-নজির আহমেদ বলেন, এ মুহুর্তে একটা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা দরকার। স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা। এ জরুরি অবস্থার আওতায় খুব ক্ষিপ্রতার সাথে সবদিক থেকে যদি ম্যানেজ করা যায় তাহলেই একটা সমাধান হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিধিনিষেধ মানার ক্ষেত্রে মারাত্মক অনীহা দেখা গেছে। কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে কেউ বাইরে না যায়।