খাদেমুল মোরসালিন : [২] নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতির শুরুতে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পরে সমাজসেবা দপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সহস্রাধিক ভাতাভোগীর ৯ মাসের টাকা বেহাত হয়েছে।
[৩] উপজেলায় জিটুপি পদ্ধতিতে ( সরকার থেকে ব্যক্তি) মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা দেয়ার সময় অসাধু চক্র ভাতাভোগীদের মোবাইল নম্বর না দিয়ে ভিন্ন নম্বর দেয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীরা এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। ভাতাভোগীরা তাদের খোয়া যাওয়া টাকা ফেরৎ পাওয়ার আশায় উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরে প্রতিদিন ধর্ণা দিচ্ছে। কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ১৭ হাজার ১শ’ ৯০ জন ভাতাভোগী রয়েছে। এর মধ্যে বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, তৃতীয় লিঙ্গ, বয়স্ক ও অন্যান্য ভাতাভোগী প্রতি মাসে ৫শ টাকা ও প্রতিবন্ধিরা ৭শ ৫০ টাকা করে ভাতা পায়। কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সকল সুবিধাভোগীর নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্ট খোলা হয়। তাদের সব তথ্য এমআইএস ডাটাবেইসে এন্ট্রি করা হয়।
[৪] উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর মোবাইল ব্যাংকিং পেমেন্টের জন্য সার্ভারে অক্টোবর-ডিসেম্বর’২০২০ এবং জানুয়ারী-জুন’২০২১ এর তথ্য আপলোড করে। পরে অনেক ভাতাভোগী মোবাইল ব্যাংকিং-এ (ডিজিটাল পদ্ধতি) ৯ মাসের পেমেন্ট না পেয়ে সমাজসেবা দপ্তরে যোগাযোগ করে। কর্তৃপক্ষ সার্ভার যাচাই করে ভাতার টাকা ভিন্ন নম্বরে যাওয়ার কথা জানান।
[৫] প্রতারিত বয়স্ক ভাতাভোগী নিতাই ইউপির মৃত নালু মামুদের পুত্র মকবুল হেসেন (৮৪) জানান, ‘মোবাইলত টাকা না প্যায়া মুই অফিসত যোগাযোগ করি দেখছু, মোর টাকা মোক না দিয়া অন্য মাইনসের নাম্বারত (০১৩২৪০৫৫৪৭৩) টাকা দিছে। মোর মোবাইল নাম্বার বাপো ০১৭৪১৯৫৬২০৬।’ এছাড়া গাড়াগ্রাম ইউপির পশ্চিম দলিরামের মোশা মামুদের পুত্র বাদল মিয়া (৭৮) একজন বয়স্ক ভাতাভোগী। তার মোবাইল নম্বর ০১৭৪০২৮২৪৬০।
[৬] তিনি অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তার ভাতার টাকা ০১৭৩০০৪৩৮০৩ নম্বরে গেছে। মাগুড়া ইউপির দক্ষিন সিঙ্গেরগাড়ীর মৃত বদী উদ্দিনের পুত্র আশেক আলী জানান, ‘মোর মোবাইল নাম্বার বাবা ০১৮৬৫৩০১৪৮৩। অফিসত যোগাযোগ করি দেখছংু মোর টাকা চলি গেইছে ০১৯১১০৯৫৪২৬ নাম্বারত। হামরা কি টাকা গুলা ফেরত পামো?’
[৭] এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ফরহাদ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রায় সহস্রাধিক ভাতাভোগীর এমন সমস্যা হয়েছে। ভিন্ন নম্বরে যাওয়া ভাতার টাকা রি-কভার করার চেষ্ঠা করছি আমরা। এই ঘটনায় নগদের লোকজন ও ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন জড়িত থাকতে পারেন বলে তিনি সন্দেহ করেন।
[৮] এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী অফিসার রোকসানা বেগম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ