লিহান লিমা: [২] সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন ২০২১-এ বলা হয়েছে, মহামারীর প্রভাবে ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে এফডিআই হ্রাস পেয়েছে ১১ শতাংশ। ডয়েচে ভেলে
[৩] আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারাবিশ্বের দেশগুলো ২০২০ সালে এফডিআই পেয়েছে ১ লাখ কোটি ডলার, যা ২০১৯ সালে ছিলো দেড় লাখ কোটি ডলার।
বাংলাদেশে গত বছর ২৫৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। ২০১৯ সালে এফডিআই এসেছিল ২৮৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশে ২০২০ সাল শেষে মোট বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ডলার। যা ২০১৯ সালে ছিলো ১ হাজার ৭৭৮ কোটি ডলার। এ নিয়ে পরপর দু’বছর বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে।
[৪] আঙ্কটাড বলেছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে এফডিআই স্টক বেড়ে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এফডিআই প্রবাহের মধ্যে ২০২০ সালে বাংলাদেশে ইক্যুইটি ক্যাপিটাল হিসেবে এসেছে ৮৪২ মিলিয়ন ডলার, মুনাফা পুর্নবিনিয়োগ হয়েছে ১ হাজার ৫৬৬ মিলিয়ন ডলার ও আন্তকোম্পানি ঋণ হিসেবে এসেছে ১৫৫ মিলিয়ন ডলার। এফডিআই প্রবাহে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে শীর্ষে রয়েছে কম্বোডিয়া। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
তবে টানা কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে গ্রিন ফিল্ড এফডিআই প্রায় ৮৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ পোশাক খাতে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ বাতিল করেছে। যার ফলে দেশের স্বাভাবিক আর্থিক কার্যক্রম ও এফডিআই সংকুচিত হয়েছে। এই সময়ে তৈরি পোশাক খাত থেকে এফডিআই অনবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ফিনটেক প্রকল্পে স্থানান্তরিত হয়েছে।
[৫] বিশ্বব্যাপী এফডিআই কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে আঙ্কটাড বলছে, মহামারীতে দেশগুলো লকডাউনে যাওয়ায় চলমান বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে ফলে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রকল্প গ্রহণে সতর্ক পথ অবলম্বন করে। এই সময়ে তৈরি পোশাক উৎপাদনে বিনিয়োগে আগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। তবে এশিয়ায় সার্বিকভাবে বিনিয়োগ প্রবাহ জোরালো থাকায় উন্নয়নশীল বিশ্বে বিদেশি বিনিয়োগের পতন তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় গতবছর যথাক্রমে ৮০ ও ৪০ শতাংশ হারে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার বিপরীতে এশিয়ায় বেড়েছে চার শতাংশ। প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করে বলা হয়, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগের পতন থামবে এবং এটি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।