হাদিউল হৃদয়: [২] বাবার শখ ছিল ছেলে বিয়ে করতে যাবে পালকিতে। বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে পালকীতে চড়ে মুখে রুমাল চেপে বর এলেন বিয়ে করতে কনের বাড়িতে। আর পালকীতে চড়ে বরের বিয়ে করতে আসা দেখতে এলাকার উৎসুক জনতা রীতিমত ভীড় জমিয়েছিলেন বিয়ে বাড়িতে।
[৩] শুক্রবার (১৮ জুন) বিকালে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পৌর এলাকার খুটিগাছা মহল্লায় পালকীতে চড়ে বর আসার এ ব্যাতিক্রমি বিয়ের বরযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
[৪] এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই মহল্লার খয়বর হোসেনের ছেলে আমিরুল ইসলামের (২৫) সঙ্গে একই মহল্লার মো. নুর ইসলামের মেয়ে আয়সা খাতুন (১৯)’র বিয়ে সমন্ধ ঠিক হয়। আর বর ও কনে স্পরপর আপন খালাতো ভাই-বোন হওয়ায় বিয়েটি ছিল যৌতুক মুক্ত বলে জানান ওই মহল্লার যুবক লিখন হোসেন।
[৫] বরের চাচা নাসির উদ্দিন ও আব্দুল জলিল জানান, ছেলে বা বরের বাবার শখ ছিল বাংলার চিরায়িত ঐতিহ্য পালকীতে চড়ে ছেলে আমিরুলকে বিয়ে করাতে কনের বাড়িতে নিয়ে যাবেন এবং পালকীতে চড়েই আদরের বৌ মাকে বাড়িতে আনবেন। সে মোতাবেক বর আমিরুলের বাবা খয়বার হোসেন পালকীর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ-খবর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার দোগাছী গ্রাম থেকে ৮ হাজার টাকায় একটি পালকী ও ৬ জন বেয়ারাকে এক দিনের জন্য ভাড়া করে নিয়ে আসেন তিনি। শুক্রবার সকালে বরের বাড়িতে ৬ জন বেয়ারা কাঁধে করে পালকীটি নিয়ে আসেন এবং বিয়ে বাড়ির বরের বন্ধবান্ধব পালকীটি সুন্দর করে সাজান। পরে বিকেল বরের বাড়ি হতে বর আমিরুলকে পালকীতে চড়িয়ে কনের বাড়িতে আনা হয়। এসময় পালকীতে চড়া বরকে দেখতে মহল্লাবাসী হুমড়ী খেয়ে পড়েন। এমনকি এ সময় কনের বাড়ির লোকজন পালকীতে চড়ে আসা বরকে দেখতে লোকজনের ভীড় সামলাতে তাদেরকে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়।
[৬] এ সময় বর আমিরুল বলেন, বাবার শখ মেটাতে পালকীতে চড়ে বিয়ে করতে যাচ্ছি। অনুভুতিটা মন্দ নয়। আর বাবার শখ বলে কথা! আর পালকীতে ছেলের বিয়ে প্রসঙ্গে বরের বাবা খয়বার হোসেন বলেন, আমাদের বাপ-দাদারা এক সময় পারকীতে চড়ে বিয়ে করতে যেতেন। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল এ যুগে পালকীতে বিয়েটা একদমই চোখে পড়ে না। তাই বাংলার অতীত চিরায়িত পালকীতে চড়ে নিজের ছেলেকে বিয়ে করানোর শখটি পুরণ করতে পেরে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :