লিহান লিমা: [২] সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে দেশটির জান্তাবিরোধী কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী। রোববার রাজধানী ইয়াঙ্গুনে কালো কাপড় পরে ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিবাদ’ প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করেন। তারা জান্তাবিরোধী প্রতীক তিন আঙ্গুল দেখিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ‘ব্ল্যাকফররোহিঙ্গা’ হ্যাশট্যাগে ছবি পোস্ট করেন। সিএনএ
[৩] মিয়ানমারের আলোচিত মানবাধিকারকর্মী থিনজার শুনলেই টুইটবার্তায় রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের প্রত্যেকের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের প্রত্যেক নাগরিক ন্যায়বিচার পাবেন।’
[৪] ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যূত্থানে উৎখাত হওয়া নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত দেশটির জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) এর পাঁচ নীতিকৌশলের একটি তে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
[৫] এই প্রতিশ্রুতি পরই শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জান্তা সরকারের মুখপাত্র ঝাও মিন তুন বলেন, ‘রোহিঙ্গা হলো একটি কাল্পনিক নাম। যারা নিজেদের এই নামে অভিহিত করে তারা আসলে ‘বাঙালি’। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের স্বীকৃত জাতিগুলোর তালিকায় নাই। তালিকা ও আইন অনুসারেই মিয়ানমার নাগরিকত্ব দেবে।’
[৬] তার এই মন্তব্যের পরপরই সামাজিক মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন জানাতে শুরু করেন গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা। এদের মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়। যদিও এক বছর আগে এসব মানুষের অবস্থান ছিল সম্পূর্ণ । এমনকি ওই সময় রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহারই নিষিদ্ধ ছিলো। তখন রোহিঙ্গাদের পক্ষ নেয়ায় অনেক অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকরা অনলাইনে তোপের মুখে পড়েন।
[৭] ইউরোপভিত্তিক আলোচিত রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী রো নায় সান লুইন বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমারের জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এক বছরের মতো সময় লাগে। রোববারই প্রথম এটি ভাইরাল হয়েছে। আমি খুবই খুশি। মিয়ানমারের জনগণ ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের প্রতি আরও সংহতি জানাবেন বলে আমি আশাবাদী।’
[৮] ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও মিয়ানমার বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছে।