শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২১, ০৩:১৩ দুপুর
আপডেট : ১৪ জুন, ২০২১, ০৩:১৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] যমুনায় পানি বৃদ্ধি নদী গর্ভে বসতভিটা, ফসলী জমি

সোহাগ হাসানঃ [২] সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, চৌহালী ও এনায়েতপুরে শুরু হয়েছে তিব্র নদী ভাঙ্গন। গত এক সপ্তাহের ভাঙ্গনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তিন শতাধিক বসতভিটা, একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিস্তীর্ন ফসলিজমি। ভাঙ্গন আতংকে নদী তিরবর্তী মানুষেরা তাদের বাড়ি-ঘড় অন্যত্র সড়িয়ে নিচ্ছেন।

[৩] সরেজমিনে ভাঙ্গন এলাকা ঘুড়ে, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই রুদ্ররুপ ধারন করেছে যমুনা নদী। পানি বৃদ্ধি শুরু হবার সাথে সাথেই জেলার এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ থেকে শাহজাদপুরের কৈজুরি পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার নদীতিরবতী এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে তিব্র নদী ভাঙ্গন।

[৪] গত দুই সপ্তাহে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাচিল ও হাট পাচিল, একই উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের পাকরতোলা ও এনায়েতপুরের ব্রাক্ষনগ্রামে তিন শতাধিক বসতভিটা ও বিস্তীর্ন ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসকল এলাকার ভাঙ্গন কবলিতরা সহায়-সম্বল হাড়িয়ে বাড়ি-ঘড় ভেঙ্গে রাস্তার পাশে বা অন্যের জমিতে আশ্রয় গ্রহণ করছে। পরিবারের নারী-শিশুসহ গবাদি পশু নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন ভাঙ্গনে নিঃস্ব হওয়া মানুষেরা।

[৫] এদিকে যমুনা নদীর পানির তিব্র ঘুর্নাবর্তের কারনে চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের হাটাইল, ঘুশুরিয়া, হিজুলিয়া, কাঠালিয়া ও উমারপুর ইউনিয়নের পয়লার প্রায় তিন কিলোমিটার নদীতিরবর্তী এলাকায়ও ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই এলাকাগুলোর বিস্তীর্ন ফসলি জমিসহ হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

[৬] ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে এই এলাকাগুলোর নদীতিরবর্তী হিজুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম সম্ভুদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাস মধ্য শিশুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিশ্রিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারবয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসুফ শাহি সলঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিলজলহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাউশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শৈলজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাটাইল নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

[৭] ভাঙ্গনকবলিত স্থানীয়দের অভিযোগ, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ থেকে শাহজাদপুরের কৈজুরি পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার নদীতিরবর্তী এলাকা বরাবরই অরক্ষিত। প্রতিবছরেই এই এলাকাগুলোতে দেখা দেয় নদীভাঙ্গন, নিঃস্ব হয় মানুষ।

[৮] সোমবার (১৪ জুন) সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে ঘর থেকে আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তেমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় হুমকির মুখে থাকা এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ইতিমধ্যে একনেকে অনুমোদন হয়েছে।প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা হাতে পেলেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

[৯] এরই মধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শণ করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও পাউবোর সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার অপু। তাঁরা ভাঙন রোধে প্রকল্প নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয়েছে বলে সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে।

[১০] পাচিল গ্রামের ডালিম বেগম বলেন, ঘরবাড়ি ভেঙে সব নদীর মধ্যে যাচ্ছে। কোথায় যাব, কী করব, কিছুই জানি না। এখন কী খেয়ে বাঁচব, আর কোথায় দাঁড়াব, সে জায়গা আমাদের নাই। বাঁশ-খুঁটি টানতে টানতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। এখনও অনেক অসহায় মানুষ আছে। এই সময় যদি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে আমরা রক্ষা পেতাম।

[১১] স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান বলেন, আমরা এলাকাবাসী হিসেবে জানতে পেরেছি, ভাঙন রোধে পাউবো কাজ করবে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে। তিনি কিছুদিন আগে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ভাঙন রোধে অচিরেই কাজ শুরু হবে। এখনও তার কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে পাইনি। নদী ভাঙনের ফলে মানুষ রাস্তার ফকির হয়ে যাচ্ছে। শত বছরের বাপ-দাদার বাড়িঘর রেখে রাস্তায় চলে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেছিলেন, এক চাপ মাটিও আর নদীতে পড়বে না। তারপরও নদী ভাঙছে। গত দু'সপ্তাহে প্রায় কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।

[১২] এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ থেকে কৈজুড়ী পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙন রয়েছে। এই জায়গায় ভাঙন রোধে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে ইতিমধ্যে অনুমোদন হয়েছে। বরাদ্দটি হাতে পেলেই স্থায়ী কাজ শুরু করব। তখন আর নদী ভাঙন থাকবে না। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়