মঈন উদ্দীন: [২] রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৪০টি ওয়ার্ডে এখন শয্যা সংখ্যা কাগজে-কলমে ১২০০টি। কিন্তু প্রতিদিন এখানে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন অন্তত দেড় হাজার। এরমধ্যে গতকাল সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের ৫টি করোনা ওয়ার্ডে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ২২৪ জন।
[৩] হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসব রোগীদের প্রত্যেককেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। কিন্তু অক্সিজেন সঙ্কটে সেটি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। এতে রোগীর চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে ব্যাপক হারে। শুধু করোনা রোগীদের জন্যই নয়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে অক্সিজেন সঙ্কটের কারণে।
[৪] এমনকি গতকাল অক্সিজেন সঙ্কটের কারণে অপারেশন থিয়েটারেও রোগীর অপারেশন করাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। একাধিক রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকেই ফেরত দেওয়া হয়েছে অক্সিজেন সঙ্কটের কারণে। পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের দায়িত্বরত একাধিক চিকিৎসক।
[৫] রামেক হাসপাতাল সূত্র মতে, এ হাসপাতালের ২৯, ৩০, ১৬, ৩ ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ৫টি ওয়ার্ডে গতকাল সকাল পর্যন্ত রোগী ছিল ২২৪ জন। যাদের সবারই অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে। কিন্তু করোনা ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডে অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে প্রত্যেককেই ঠিকমতো অক্সিজেন দেওয়া যাচ্ছে না। যার যখন সমস্যা বেশি হচ্ছে, অক্সিজেন সাপোর্টকৃত শয্যার কাছে নিয়ে গিয়ে তাকে সেখানে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। তারপরেও অক্সিজেন সঙ্কটের কারণে ঠিকমতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
[৬] করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশনা করার শর্তে বলেন, ‘রামেক হাসপাতালে এই মুহূর্তে চরম সঙ্কট চলছে অক্সিজেনের। যেটি যে কোনো সময় আরও ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি রোগীদের বেডও ঠিকমতো দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। অক্সিজেন না পেয়ে অনেক রোগী ভর্তি হওয়ার পরেও বাইরে চলে যাচ্ছে। আবার কিছুটা সুস্থ হলেই আমরা রোগীদের হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। র্পূণাঙ্গ সুস্থ হওয়ার সুযোগও পাচ্ছেন না রোগীরা।’
[৭] এদিকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটরের একাধিক চিকিৎসক জনান, গতকাল সকাল থেকে অপারেশন থিয়েটরেও অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দেয়। এতে করে একাধিক রোগীকে আবার ওয়ার্ডে পাঠাতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। একেবারে জরুরী রোগী ছাড়া অক্সিজেনের কারণে গতকাল কোনো গুরুত্বপূর্ণ রোগীকে অপারেশন করানো যায়নি।’
[৮] জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত কয়েকদিন ধরেই করোনা রোগীর চাপ বেড়েছে। এতে করে ৫টি ওয়ার্ড ভরে গেছে।
[৯] নতুন রোগীর চাপ বাড়লে আরও ওয়ার্ড খোলা যাবে। কিন্তু অক্সিজেন তো চাইলেও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দেওয়া যাচ্ছে না। আবার আইসিইউ সঙ্কটও রয়েছে চরম। নতুন রোগীকে সহজে আইসিউ দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।’ সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ