খাজা নিজাম উদ্দিন: সে অনেক আগের কথা। তখন জনসংখ্যার গতি প্রকৃতি নিয়ে আমি প্রচুর কাজ করছি। এর মধ্যে আমাকে একজন বললো, ফেনসিডিল খেলে বাচ্চা হয় না। তো আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। ২০ বছর আগের কথা। তো কারা খায়, সেটা নিয়ে ১৫ দিনের একটা অবজার্ভশন করলাম। বসুন্ধরা মার্কেটের পেছনের খবর পেলাম। সে এক আশ্চর্য কাজ কারবার। সব স্মার্ট, শিক্ষিত, চাকরিজীবী কিংবা তরুণ ব্যবসায়ী। এতো লোক ফেনসিডিল খায়? তাদের যদি বাচ্চা না হয়? জনসংখ্যার কী হবে? তবে আশ্চর্য হয়েছিলাম, অনেক মেয়েকেও আমি ফেনসিডিল খেতে দেখেছি এবং তারা শিক্ষিত তরুণী, অনেকে চাকরিজীবী। ওপরের কথাগুলো বললাম, আসলে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক গবেষণা নিয়ে। তারা বলেছেন ৩/৪ দশকের মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। অবশ্য এ নিয়ে আমিও লিখেছি অনেক। এর জন্য আসলে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষণার জন্য বসে থাকতে হয় না। যেমন ধরুন- পরকিয়া। বাংলাদেশে পরকিয়া করোনার চেয়ে অনেক ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ক্ষেত্রে সংসারের অশান্তি, ডিভোর্স, খুন, এসব লেগেই আছে। প্রতিদিন ৫/৭টা পরকিয়াজনিত খুনের ঘটনা থাকে। এরা আবার বাচ্চা কাচ্চা নিতে চায় না। অহুধিু,- পরকিয়া বাংলাদেশের জনসংখ্যা কমাবে। - ডিভোর্স তাও বাড়ছে বিদ্যুৎগতিতে, তাও জনসংখ্যা কমাবে। - জব মার্কেটের স্থবিরতা, তাও জনসংখ্যা কমাবে। - প্রতিবছর অন্তত ৩-৫ লাখ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, এবং নানা রোগব্যাধী মৃত্যুহার বাড়াতেই থাকবে। - ঢাকা থেকে প্রতিবছর ৮-১০ লাখ বিদেশে চলে যাচ্ছে স্থায়ীভাবে। ঘটিবাটি বিক্রি করে প্রচুর মানুষ বিদেশে চলে যাচ্ছে। বিদেশে যাওয়ার পাইপ লাইনে আছে আরও ৪০-৫০ লাখ লোক। অনেক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বিক্রি করে দিয়ে কানাডাসহ নানা দেশে ভাগতেছে এবং তারা ভাগতে থাকবে। রাজনীতিবিদ আর আমলাদের অনেকেই এদেশের রক্ত যতোটা শুষে খাওয়া যায়, তারপরে খেয়ে ভাগবে, অনেকে ভাগছে। - বিয়ের আগ্রহ কমে যাচ্ছে, সেটাও জনসংখ্যা কমাবে। - লিভ টুগেদার বাড়ছে, তাও জনসংখ্যা কমাবে।- ইয়াবা, ফেনসিডিল দীর্ঘদিন যারা খায়, এরাও জনসংখ্যা কমাবে, নিজেরা তো মরবেই, সঙ্গে নতুন জেনারেশন দিয়ে যেতে পারবে না। - প্রবাসে যে ১ কোটি আছে, তাদের বড় অংশটাই আর ফিরে আসবে না। অনেকেই পরিবার স্থায়ীভাবে নিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। -ভেজাল খেয়ে মানুষ প্রতিবছর অধিকহারে মারা যাচ্ছে। - সড়ক দুর্ঘটনায় আরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। - ই-কমার্স ঢাকার জনসংখ্যা হ্রাসে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখবে। - দেশে সিংগেল মাদার আর সিংগেল ফাদার, তারাও জনসংখ্যা কমাতে ভূমিকা রাখছে। আর বড় বিপদ হচ্ছে - সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটাবে আমাদের নিউ জেনারেশন। সেটা ইউরোপ বা জাপানের মতো ঘটাবে। সেটা হলো, এরা এতো এতো এতো ব্যস্ত থাকবে যে, বিশেষ করে বড় একটা উদ্যোক্তা শ্রেণি গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে, ব্যবসা দাঁড়া করাতে গিয়ে এদের সংসারে নজর কম দিতে পারেব। ক্যারিয়ার গড়ার পেছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে সংসার গড়তে পারবে না অনেকেই। একটা বড় অংশের একাধিক বিয়ের ঘটনা ঘটবে, বাচ্চা কাচ্চা নেয়ার প্রতি আগ্রহ কমবে। আবার একটা অংশ বিয়েশাদী করতে চাইবে না। একটা অংশ স্বাধীন জীবন যাপন করতে চাইবে, পরিবার গড়তে চাইবে না। একটা অংশ দেশে থাকবে না। একটা অংশ অনলাইন লাইফ নিয়ে থাকবে। বহুগামিতা বাড়বে। যেখানে বহুগামিতা বাড়ে অথবা জীবন যাপনের জন্য উন্নত দেশের মানুষের মতো খালি দৌঁড়াতেই হয়, দৌঁড়াতেই হয়- সেখানে জনসংখ্যা কমবে।
আপাতত শিক্ষিত পরিবারে ২ বাচ্চা বা ১ বাচ্চাই বেশি। এটা আগামীতে ১ বাচ্চা আর নাই বাচ্চাতে চলে যেতে পারে। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির পুরো রিপোর্ট হয়তো আসেনি। প্রশ্ন হলো, জনসংখ্যা আর বাড়ার কোনো সম্ভাবনা ইতোমধ্যেই হারিয়ে গেছে। কথা হচ্ছে, হঠাত দ্রুত জনসংখ্যা হ্রাস পাবে কিনা? বাংলাদেশে হঠাৎ জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার একটা বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা ২০৩০-২০৩৫ এর মধ্যে ঘটার সম্ভাবনা বেশি। শানে নজুল কী? বিনিয়োগের বিষয়ে খুব সাবধান থাকা। জনসংখ্যা না থাকলে খুব বিপদ। তো যেখানে বিনিয়োগ করেন, জনসংখ্যার একটা বড় পতনের কথা মনে রেখে করতে হবে। সেটা রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ হোক, ব্যক্তিগত বিনিয়োগ হোক। অহুধিু, ঢাকার জনসংখ্যা করোনার কারণে অন্তত শতাংশ কমেছে। পদ্মা সেতু, ১০১টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, মীরসরাই সীতাকুণ্ডের শিল্পাঞ্চল চালু হচ্ছে, সবকিছু অনলাইন হয়ে যাচ্ছে, এসব কারণে ঢাকার জনসংখ্যা আরও কমবে। ঢাকায় লাখ লাখ বর্গফুট অফিস স্পেস খালি আছে, আরও খালি হবে। ঢাকার অনেকে মার্কেটে মাছিও যাবে না। নতুন মার্কেট আর হবে না তেমন। সর্বোচ্চ উঁচুতে উঠে গেলে ধীরে ধীরে পতন স্বাভাবিক। তবে জনসংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে ২ দশকের মধ্যেই কমে যেতে পারে। ফেসবুক থেকে