বিপ্লব বিশ্বাস: [২] নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাত-উল-জিহাদ (হুজি) ফিরে এসেছে। এবার এটি সংগঠিত হয়েছে হেফাজতের বেশ ধরে।
[৩] একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা জানান, ‘ ভারতের প্রধানমন্ত্রী আশা থেকে শুরু করে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, এটা আসলে হুজির পরিকল্পিত কর্মকাণ্ড ছিল।’
[৪] ইসলামের প্রচার-প্রসার নিয়ে কাজ করা মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম হেফাজত ২০১৩ সালের পর থেকে দ্রুতই রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারকারী একটি দলে পরিণত হয়। ফলে হুজি, জেএমবি ও আনসার আল-ইসলামের মতো চরমপন্থি ইসলামী সংগঠনগুলো হেফাজতে যোগ দিয়ে এর ছায়ায় আবারও সংগঠিত হতে শুরু করে।
[৫] বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন কয়েকজন সদস্য বলেন আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনার পর ২০০৫ সালে হুজিকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও ওই হামলায় ২২ জন নিহত হন। এক বছর আগে থেকে হেফাজতের ছায়ায় আবারও সংগঠিত হতে শুরু করে হুজি। সম্প্রতি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির ওপর কিছুটা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে তারা। তদন্তকারীরা জানান, সম্প্রতি গঠিত হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটিতে হুজির বেশ কয়েকজন নেতা পদ পাওয়ার পর সংগঠনটির ওপর হুজির প্রভাব বাড়তে শুরু করে।
[৬] ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা শাখা) মাহবুব আলম কিছুদিন আগে বলেন, ‘তদন্তে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে হেফাজতের যোগসূত্র থাকার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। ধর্ম-ভিত্তিক এই সংগঠনটির সঙ্গে আফগানিস্তান ফেরত একটি দল ও. জামায়াত-শিবিরের কিছু সদস্য যুক্ত হয়েছে।’
[৬] ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আরো জানান, আফগানিস্তান ফেরতদের এই দলটি হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনে। তারাই মূলত হেফাজতের বেশ ধরে ধ্বংসাত্মক কাজগুলো করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তাদের (আফগানিস্তানফেরত) চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’সম্পতি তাদের সহিংসতায় কয়েক ডজন সরকারি স্থাপনা, রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ স্টেশন ও ফাঁড়িতে হামলা চালায় হেফাজত কর্মীরা।
[৭] হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের ১৬টি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। পিবিআই জানিয়েছে, তারাও এই সহিংসতার সঙ্গে হুজির সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে থাকা পিবিআইয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হেফাজতের ছদ্মবেশে হুজি তাদের সদস্য নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও হেফাজতের সাম্প্রতিক তাণ্ডবের সঙ্গে হুজি ও জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন।