স্বকৃত নোমান: বিদ্রোহী কবিতায় বারংবার ‘আমি’র যে ব্যবহার, সেই আমি কি কাজী নজরুল নিজে? কবিতায় ব্যবহৃত ‘আমি’ কি কেবলই কবির, না সার্বজনীন? নজরুল তো অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক। সর্বধর্ম, সর্বমানবের ঐক্যের প্রতীক। কিন্তু তাঁকে কবর দেওয়া হলো মসজিদের পাশে। কেন? ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই’― সেজন্য? এই ‘আমায়’ কি নজরুল নিজে, না সমগ্র মুসলমান সম্প্রদায়?
আর নজরুল কি কেবলই মুসলমানের? তাহলে তো তাঁর পুত্রের নাম কৃষ্ণমোহাম্মদ হওয়ার কথা ছিল না, তাঁর শ্যামা সংগীত লেখার কথা ছিল না। নজরুলের কবরের পাশে মসজিদ থাকলে তো যৌক্তিকভাবে একটা মন্দিরও থাকার কথা। আছে কি? তার মানে নজরুলকে আমরা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছি। অথচ নজরুল তা ছিলেন না। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার বিপুল উপাদান নজরুল-সাহিত্যে রয়েছে। ব্যক্তি নজরুলও অসাম্প্রদায়িকতার উজ্জ্বল প্রতীক। কিন্তু আমরা ব্যক্তি নজরুল বা তার সৃষ্টিকর্মকে কাজে লাগাইনি, লাগাচ্ছি না।
লেখক : কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :