শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২১, ০৩:৩৭ রাত
আপডেট : ২৬ মে, ২০২১, ০৫:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের কাছ থেকে ভিক্ষা নিতে “ভিক্ষার থালা” নিয়ে ঘুরছে পাকিস্তান!

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের পাকিস্তান প্রোগ্রামের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান। তিনি বলেছে, সাম্প্রতিক সময় ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে যে ধ্বস, তা অব্যাহত থাকলে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি একই হারে এগিয়ে চললে আসছে সময়ে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের সাহায্যের জন্য হাত পাততে হতে পারে।

“এইড ফ্রম বাংলাদেশ” নামের এক প্রবন্ধে আবিদ হাসান লেখেন, “২০ বছর আগে এটি চিন্তাও করা যেত না যে, ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি পাকিস্তানের দ্বিগুণ হবে। এভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়তে থালে ২০৩০ সালে বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে।”

সোমবার (২৪ মে) প্রবন্ধটি প্রকাশ করা হয়। সেখানে এই উপদেষ্টা আরও লেখেন, “অর্থনীতিতে পাকিস্তানের এই অবস্থা যদি অব্যহত থাকে তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিকে বাংলাদেশ থেকে সাহায্য নেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

আবিদ হাসান পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি দেশটির ফেডারেল বোর্ড অব রেভেনিউ ট্যাক্স রিফর্মস গ্রুপের সদস্যও ছিলেন।

বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তানকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে চাইলে, পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ও ঋণের পরিমাণ কমাতে চেষ্টা করতে হবে।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের বর্তমান সরকারসহ আগের সরকারগুলো সারা বিশ্বের কাছে “ভিক্ষার থালা” নিয়ে ঘুরেছে। অর্থনীতির এই অবস্থা পাকিস্তানের নিজের দোষেই হয়েছে। তবে দেশের নেতারা তা মানতে নারাজ। তারা বারবার তাদের শত্রু, আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাংককে এর জন্য দোষারোপ করেছে।

এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে আইএমএফ কিংবা বিশ্ব ব্যাংকের কিছুটা দোষ আছে। তবে আসল কথা হলো খারাপ অর্থনীতির জন্য মূলত পাকিস্তানই দায়ী।

পাকিস্তানের ভুল নীতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দু’টো হলো-

১. সরকারের দেশি ও বিদেশি ঋণের অত্যাধিক ব্যবহার।

২. অত্যাধিক বিদেশি ঋণ থাকার পরও রফতানির তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত আমদানি।

আবিদ হাসান আরও বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ধর্ম, কর্মক্ষেত্রে নৈতিকতার অভাব, অগোছালো রাজনীতি, দূর্বল জনপ্রশাসনের মতো বিষয়গুলোতে মিল থাকা স্বত্বেও বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে যা একটি উদাহরণ।

“মাত্র দুই দশকে অর্থনীতির মূল নির্দেশকগুলোতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পাকিস্তানের চেয়ে আড়াইগুণ বেশি। কীভাবে বাংলাদেশ একটি চমৎকার গল্পে পরিণত হলো এবং পাকিস্তান বিশৃঙ্খল কাহিনীতে?”

তিনি বলেন, বাংলাদেশে জিডিপির মোটামুটি ৩০ শতাংশ সঞ্চয় করা হয়। আর পাকিস্তানে এই সঞ্চয়ের পরিমাণ ১৫-২০ শতাংশ।

২০০০ সালে পাকিস্তানের রফতানি ছিলো বাংলাদেশের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। তখন থেকে বাংলাদেশের রফতানি ৭০০ শতাংশ বেড়েছে, যা পাকিস্তানের চেয়ে সাড়ে তিন গুণ বেশি। ২০২০ সালে এসে বাংলাদেশের রফতানি পাকিস্তানের দ্বিগুণ।

এছাড়া গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময়ে বাংলাদেশের অর্থিক ঘাটতি ছিলো জিডিপির ৩ শতাংশ, আর পাকিস্তানের ছিলো এর দ্বিগুণ। অপর দিকে ২০ বছর ধরে পাকিস্তানের মাথাপিছু সমন্বিত সরকারি খরচ ছিলো ৪ হাজার মার্কিন ডলার। একই খাতে বাংলাদেশের খরচ ছিলো এর অর্ধেক।

আবিদ বলেন, পাকিস্তান মাথাপিছু সরকারি খরচ বেশি করা স্বত্বেও বাংলাদেশের চেয়ে তারা অর্থনৈতিক ও মানব উন্নয়ন সূচকে পিছিয়ে আছে।

পাকিস্তানের দায়িত্বহীন অর্থিক ও বাণিজ্যিক নীতির ফল-

১. পাকিস্তানের জনগণের মাথাপিছু ঋণ সরকারের রাজস্বের প্রায় ৬০০ শতাংশ, যা বাংলাদেশের দ্বিগুণ।

২. বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে ব্যাংক লোন ২০০ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ৮০ শতাংশ।

৩. পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ রফতানির ৪০০ শতাংশ, যা বাংলাদেশের চেয়ে ৪ গুণ বেশি।

আবিদ হাসান বলেন, “এটা আমাদের (পাকিস্তানের) আত্মসম্মানে আঘাত হানবে, তবুও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে, ঋণ কমাতে, বাংলাদেশের কাছে হাত পাতার সম্ভাবনা দূর করতে হলে এ বিষয়ে বাংলাদেশকে অনুকরণ করতে হবে। সফলতার কোনো শর্টকাট নেই, সঠিক অর্থনৈতিক নীতিমালা মেনে চলা ছাড়া।”

সূত্র- ঢাকাট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়