সুজন কৈরী: গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায় রোবাবর অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কিশোর গ্যাংয়ের ১০ সদস্য গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- হৃদয়, মনা মিয়া, রনি, নবী হোসেন, টিটু মিয়া, রানা মিয়া ওরফে বাবুল, বাবু মিয়া, আপন হোসেন, অপু হোসেন সিয়াম ও হানিফ। তাদের কাছ থেকে ৫টি মোটর সাইকেলের পুরাতন চেইন, ৪টি চাকু, ৩টি মোবাইল ফোন ও ৩টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব বলছে, বর্তমান সময়ে কিশোর গ্যাং, গ্যাং কালচার, উঠতি বয়সি ছেলেদের মাঝে ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক গ্রুপের সাথে অন্য গ্রুপের মারামারি করা বহুল আলোচিত ঘটনায় পরিনত হয়েছে। গ্যাং সদস্যরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জাহিরের জন্য উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দল বেধে ঘুরে বেড়ায়, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়, পথচারীদের উত্ত্যক্ত করে এবং ছোট খাট বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের উপর চড়াও হয়ে হাতাহাতি-মারামারি করে। এছাড়াও তারা নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য একই এলাকায় অন্যান্য গ্রুপের সাথে প্রায়সই কোন্দলে লিপ্ত থাকে। তাদের এই ধরনের চলাফেরার কারণে সাধারণ লোকজন তাদের অনেকটাই এড়িয়ে চলে। এই এড়ানোর বিষয়টিকে তারা তাদের ক্ষমতা হিসেবে ভাবে এবং কোন ঘটনায় কেউ কোন প্রতিবাদ করলেও ক্ষমতা জাহির করতে মারামারি করাসহ অনেক সময় খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না।
র্যাব-১ গোয়েন্দা অনুসন্ধান করে জানতে পারে, রাজধানীর উত্তরা ও গাজীপুরের টঙ্গী এবং পূবাইল থানা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকারী ‘ডেঞ্জার সেভেন গ্রুপ’, ‘কাটার গ্রুপ’, ‘হৃদয় গ্রুপ’, ‘নন স্টপ ড্যান্স গ্রুপ’ নামক বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। এই গ্রুপগুলো উত্তরা এবং টঙ্গী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার করছে। তারা মাদক সেবন, স্কুল-কলেজে বুলিং, র্যাগিং, ইভটিজিং, ছিনতাই, ডাকাতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অনৈতিক কাজে লিপ্ত।
সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা আরেফিন শাকিল নামে এক কিশোরকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। যা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে কিশোর গ্যাংয়ের বিপথগামী সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১ সম্প্রতি গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোর গ্যাংয়ের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।