শিরোনাম
◈ অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া? বিএনপি–জামায়াতের মধ্যে আলোচনা উদ্যোগ ◈ আজ ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস ◈ ভয়ানক অভিযোগ জাহানারার, তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গন (ভিডিও) ◈ জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও সময়মতো জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান বিএনপির স্থায়ী কমিটির ◈ কমিশনের মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আপ্যায়ন বাবদ ব্যয়  ৪৫ লাখ টাকা ◈ ভার‌তের কা‌ছে পাত্তাই পে‌লো না অস্ট্রেলিয়া, ম‌্যাচ হার‌লো ৪২ রা‌নে ◈ শুল্ক চুক্তির অধীনে মা‌র্কিন উ‌ড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি বিমান কিনছে বাংলাদেশ ◈ টিটিপাড়ায় ৬ লেনের আন্ডারপাস, গাড়ি চলাচল শুরু শিগগিরই (ভিডিও) ◈ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ বার্তা ◈ ভালোবাসার টানে মালিকের সঙ্গে ইতালি যাওয়া হলো না সেই বিড়াল ক্যান্ডির!

প্রকাশিত : ১৭ মে, ২০২১, ১০:৪২ দুপুর
আপডেট : ১৭ মে, ২০২১, ১০:৪২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মমতাজউদ্দীন পটোয়ারী : শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বমহিমায় ফিরে এসেছে

মমতাজউদ্দীন পটোয়ারী : ১৭ মে ১৯৮১ সালের এই দিনে নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দীর্ঘ পোনে ৬ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে নিজ মাতৃভ‚মি বাংলাদেশে পা রাখতে পারলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বর্বর হত্যা করার সময় শেখ হাসিনা, স্বামী দুই সন্তান এবং ছোট বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় ঘাতকদের বুলেট থেকে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তাদের বেঁচে থাকার পরও দেশে ফেরার নিষেধজ্ঞা ছিলো, হত্যার হুমকি তাদের তাড়িয়ে বেরিয়েছিলো অথচ তারা কেউ রাজনীতির বিশেষ কোনো অবস্থানে ছিলো না। বিদেশে থাকায় তারা প্রাণে বেচেঁ গেলেও ঘাতকরা তাদের তাড়িয়ে বেরিয়ে ছিলো।

শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া পরমাণু বিজ্ঞানী হিসেবে ভারতের দিল্লিতে একটি গবেষণাগারে চাকরি করছিলেন, সেখানেই সপরিবারে তাদের বসবাস। এদিকে দেশে সামরিক শাসন, মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি, অনেকটাই ভেঙে তছনছ করে দিয়েছিলো। ফিরিয়ে এনেছিলো স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে, দল গঠিত হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভাবার্দশের সেই অবস্থায় আওয়ামী লীগ দিধা বিভক্ত এবং অনেকটাই পর্যদস্ত ছিলো। রাষ্ট্র রাজনীতির এমন বিপোরীত শ্রোতের মুখে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করা ব্যাতিত বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে আনা অসম্ভব ব্যাপার ছিলো সরকারা এবং ঘাতকরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, অপপ্রচার এবং মিথ্যাচারিই শুধু করছিলো না, দলটি যাতে ঐক্যবদ্ধ না হতে পারে সে ধরনের চাপ ও ষড়যন্ত্র অব্যহত রাখে। তবে সামরিক শাসন এবং সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে ক্ষমতার দ্ব›দ্ব এবং পাকিস্তানিকরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চলে আসছিলো।

১৯৮১ সালে ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রæয়ারি আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন নির্ধারিত হয়। সম্মেলনে যাতে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ না হতে পারে, সেই চেষ্টা ও তৎপরতা প্রভাবশালী মহল থেকে ছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে দলের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকারকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছিলো সম্মেলনের আগেই কয়েকজন নেতা দিল্লিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ করেন। সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনে যথারীতি ঐক্যের অভাব পরিলক্ষিত হলে শেখ হাসিনার নাম সভাপতি পদে উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণের উচ্ছ¡াস বয়ে যায়। আওয়ামী লীগ যেমন নতুন প্রাণের সন্ধান খুঁজে পায়, পরদিন সারাদেশে মানুষের মুখে মুখে শেখ হাসিনার নাম উচ্চারিত হতে থাকে। আওয়ামী লীগকে যারা দ্বিধাবিভক্ত করতে ওৎ পেতে ছিলো তারা হতাশ ও ক্ষুবদ্ধ হয়েছিলো। সে কারণে পঁচাত্তরের ঘাতকেরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছিলো তারা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরলে হত্যা করার হুমকিও দিচ্ছিলো কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী-সমর্থক এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যাদের ছিলো তারা ঘাতকদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়।

১৭ মে তারিখ বিমান বন্দরে হাজার হাজার মানুষ শেখ হাসিনাকে বরণ করতে উপস্থিত হয়। সেদিন বিকেল বেলা শেখ হাসিনা ঢাকা বিমান বন্দরে দিল্লি থেকে আসা বিমানে করে আসলেন, বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলেন। পোনে ছয় বছর পর তার এই আগমণ, তবে শোকাহত বেদনা বিদুর ও অশ্রæসিক্ত তিনি ফিরলেন লাখো জনতার মাঝে। এই ফেরার মাধ্যমে শেখ হাসিনা দায়িত্ব কাধে তুলে নিলেন দলের পুনর্জীবন ঘটানোর একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত রাজনীতি এবং রাষ্ট্র গঠনের কাজ সম্পন্ন করার। দেশটা তখন বিপরীত শ্রোতে বয়েছিলো। তিনি এই ¯্রােতের বিপরীতে নৌকার হাল ধরলেন আওয়ামী লীগ সংগঠিত হতে থাকলো, আন্দোলন সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে নির্বাচনে তিন জোটের রূপ রেখার প্রতিফলন ঘটেনি। বাংলাদেশের ধর্ম ভারতবিরোধিতা এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকে নির্বাচনে পুঁজি করা হয়। বিএনপি-জামায়াতের সর্মথন নিয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হয়, তিন জোটের রূপরেখা রাজনীতিতে আর গুরুত্ব পায়নি। বাংলাদেশের রাজনীতি সাম্প্রদায়িকতা বনাম অসাম্প্রদায়িকতার মেরুকরণের বিভক্ত হয়ে পরে এই দুই ধারা স্পষ্ট হয়ে যায়। শেখ হাসিনা মূল ধারা একাত্তরের আর্দশে দেশকে পুনর্গঠনের অঙ্গীকার করেন।

১৯৯৪ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি পাঁচ বছর দেশকে মুক্তি যুদ্ধের ধারায় পরিচালিত করার উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধুহত্যার বিচার শুরু করেন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে মিশ্র অর্থনীতি ও আত্মনির্ভরশীলতার নীতি কৌশল অনুসরণ করেন। বাংলাদেশকে উদার গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে কতোখানি অর্থনৈতিক, সামাজিক, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা সাংস্কৃতি এবং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দাড় কারতে সক্ষম হয়েছেন তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। এই চল্লিশ বছর তিনি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সতের বছর সরকারের দায়িত্ব নিয়ে দেশকে আর্থসামাজিক ভাবে যতোটা পরির্বতনের উচ্চতায় নিতে পেরেছেন তা পূর্ববর্তী কোনো শাসন কালে ঘটার কোনো সম্ভাবনায় ছিলো না, ইতিহাস তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে মূল্যায়ন করবে তাতে বঙ্গববন্ধুর অসমাপ্ত রাষ্ট্র চিন্তার বেশকিছু উপাদানের অগ্রগতি স্বাধিত হওয়ার প্রমাণ খুঁজে পাবে। তবে তিনি যদি বেঁচে না থাকতেন, ফিরে না আসতে পারতেন বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব না পেতেন তাহলে পচাত্তর পরবর্তী রাজনীতির ¯্রােত বেগবান হতো, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ক্ষয়প্রাপ্ত হতো। সেই অপধারা থেকে বাংলাদেশকে তুমি রক্ষা করেছো। পরিচিতি : শিক্ষাবিদ। অনুলিখন : আব্দুল্লাহ মামুন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়