শিরোনাম
◈ এলডিসি থেকে উত্তরণ: আরও তিন বছরের সময় চাইছে বাংলাদেশ ◈ জাপানে জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী সরকার ◈ ১৭ বিয়ের ঘটনায় মামলা, সেই বন কর্মকর্তা বরখাস্ত ◈ বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কু.পিয়ে হ.ত্যা ◈ বাংলা‌দেশ হারা‌লো আফগানিস্তানকে, তা‌কি‌য়ে রই‌লো শ্রীলঙ্কার দিকে  ◈ রোজার আগে নির্বাচন দিয়ে পুরোনো কাজে ফিরবেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ ঋণের চাপে আত্মহত্যা, ঋণ করেই চল্লিশা : যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ◈ একযোগে এনবিআরের ৫৫৫ কর্মকর্তাকে বদলি ◈ আবারও রেকর্ড গড়ল স্বর্ণের দাম, ভরিতে বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা ◈ ভারতের নেপাল নীতিতে 'রিসেট বাটন' চাপলেন মোদি, শিক্ষা বাংলাদেশের কাছ থেকে

প্রকাশিত : ০৬ মে, ২০২১, ০৪:২১ সকাল
আপডেট : ০৬ মে, ২০২১, ০৪:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন কি বুঝতে পারছে যে, পোস্ট প্যান্ডেমিক বিশ্ববিদ্যালয় আর প্যান্ডেমিকের আগের বিশ্ববিদ্যালয় এক হবে না?

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন কি বুঝতে পারছে যে পোস্ট প্যান্ডেমিক বিশ্ববিদ্যালয় আর প্যান্ডেমিকের আগের বিশ্ববিদ্যালয় এক হবে না? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন কি বুঝতে পারছে যে করোনার প্যান্ডেমিক হয়তো আগামী বেশ কিছু বছর ধরে নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে ফিরে আসবে। যতোদিন না এর চিরস্থায়ী ব্যবস্থা না আসে নিশ্চই আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখতে পারি না। আমাকে যেইটা কষ্ট দেয় সেটা হলো আমাদের প্রশাসন বা ইউজিসি কিংবা সরকার কেউই এইটা নিয়ে যতো জোরালোভাবে ভাবা উচিত ছিল তার ছিটেফোঁটাও ভাবছে না। আমাদের প্রশাসনকে বুঝতে হবে পোস্ট প্যান্ডেমিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে কোনো গণরুম এমনকি চার জনের রুমে আট জন থাকতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কি তা ভাবছে? এইটা নিয়ে জরুরিভাবে ভাবতে হবে। আবাসিক এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের কাছ থেকে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানাতে হবে। এমনিতেই আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমরা শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসিক এলাকা বানিয়ে ফেলেছি। পৃথিবীতে এমন আরেকটি দেশ দেখানতো যেখানে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসিক ব্যবস্থার জন্য বিশাল এলাকা দখল করে ফেলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়জোর ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা থাকতে পারে। সেটাও সীমিত আকারে। অর্থাৎ প্রথমবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ইচ্ছুকদের সকলকে আবাসিক ব্যবস্থার মধ্যে আনা হয় কারণ প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরাই সবচেয়ে বেশি uvlnerable! তাদের বয়স কম এবং তাদের অনেকের জন্যই শহর নতুন।

তারপর ধীরে ধীরে তৃতীয় বর্ষের মধ্যে সকলকেই off campus-এ চলে যেতে হয়। আর আমাদের দেশে হয় উল্টো। যতো সিনিয়র ততোই তারা জেঁকে বসে। বসতে বসতে এমন অবস্থায় পাশ করার পরও অনেকে ক্যাম্পাস ছারে না। নতুন পরিস্থিতির একটা সমাধান হতে পারে শিক্ষকদের বাসা খালি করার মাধ্যমে। শিক্ষকরা কিন্তু কেউ ফ্রি থাকে না। যেই টাকা দিয়ে ক্যাম্পাসে থাকে সেই টাকা দিয়েই আশেপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবে কিন্তু ছাত্ররা ইচ্ছে করলেই পারবে না। সত্যি বলতে কি ছাত্রদের সহজে কেউ বাসা ভাড়া দেয়ও না। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শিক্ষক কর্মকর্তাদের এইটুকু স্যাক্রিফাইস করতে দ্বিধা করা উচিত না। মুদ্দা কথা হলো কোনো না কোনোভাবে ছাত্রদের আবাসিক সংকট সমাধান না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খোলা সম্ভব না। সবাইকে ভ্যাকসিন দিয়ে উঠালেও ভ্যাকসিন কতোটা কার্যকর এবং এন্টিবডি কতোদিন থাকবে এইসবের এখনো সুরাহা হয়নি। কিন্তু আমরা যদি আমাদের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এইভাবে দূরে রাখি তাহলে  এর একটা সুদূরপ্রসারী বিরূপ ফল আমাদের ভোগ করতে হবে।

গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ঘোষণা করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষা নিতে পারবে। ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরদের (ভিসি) সঙ্গে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহর ভার্চ্যুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ জোরেসোরেই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এক সংবাদ সম্মেলনে হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। এদিকে গত বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। তবে অনলাইনে ক্লাসে উৎসাহ দিয়ে আসছিল ইউজিসি। কিন্তু পরীক্ষা না হলে শুধু ক্লাস নিলে সেশনজটের আশঙ্কা থেকে যায়। এইসব প্রমান করে আমরা আসলে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট পরিমানে ভাবছি না। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়