শিরোনাম
◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ নির্বাচনের মাঝেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৪ মে, ২০২১, ০৩:০১ রাত
আপডেট : ০৪ মে, ২০২১, ০৬:৩৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আউটসোর্সিংয়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা পাচ্ছেন না প্রণোদনা

নিউজ ডেস্ক: সরকারি হাসপাতালগুলোতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা পাচ্ছেন না প্রণোদনা। অথচ করোনা মহামারিতে আইসিইউ, সিসিইউসহ হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কাজ করে তাদের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা ভয়ে যেখানে স্বজনরা পর্যন্ত রোগীর পাশে থাকতে চান না, সেখানে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক রোগীর পাশে থাকছেন। রোগীর মলমূত্র পরিষ্কার করা, রোগীকে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া, রোগীর বিছানা পরিষ্কার ও হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। তারপরও রোগীর পাশে তারা থাকছেন। সরকারি হাসপাতালের পরিচালকরা বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরাই হচ্ছেন হাসপাতালের মেইন ফোর্স। ডাক্তার-নার্সদের পাশাপাশি এরাও করোনা রোগীদের পাশে সার্বক্ষণিক আছেন। তাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অথচ তারা প্রণোদনা পাবে না—এটা অমানবিক।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত চিকিত্সক ও নার্সসহ অন্যরা প্রণোদনা পাবেন। তবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হাসপাতালে নিয়োজিত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীসহ চার ক্যাটাগরির কর্মকর্তা- কর্মচারীদের এই প্রণোদনা দেওয়া হবে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ দেওয়া হলেও হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অধীনে চলে যান। মূলত ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনাররা হলেন আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির স্বাস্থ্যকর্মী। হাসপাতালের পরিচালকের অধীনেই তারা কাজ করেন। আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি, তারপরও প্রণোদনা কেন পাব না। এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, এক সময় হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সরকারিকরণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তী সময় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মচারী নেওয়া হচ্ছে। নিয়োগদাতা হলেন ঠিকাদার। কোনো কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পেতে হয়। আর এভাবে নিয়োগ ব্যবস্থা থাকায় এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতা, আমলাদের স্বজনরা সুযোগ গ্রহণ করে থাকেন। আর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত বেতনের একটি অংশও নিয়ে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অথচ এখানে তাদের কোনো ধরনের বিনিয়োগ নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনা না দেওয়া অন্যায়। এরা কাজ করে, আর অন্যরা তার সুফল ভোগ করে—এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? করোনা রোগীর মলমূত্র থেকে শুরু করে হাসপাতালে সার্বিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এদের প্রণোদনা না দেওয়া খুবই অন্যায়। এই বৈষম্যের মাধ্যমে হাসপাতালে গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হবে, এক পর্যায়ে চিকিত্সাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, করোনার টাকা লুটপাট হচ্ছে। নিম্নমানের সামগ্রী ক্রয় করা হচ্ছে। সেদিকে অনেকের খেয়াল নেই। তবে যারা সেবা দেবে তাদের বঞ্চিত রেখে ভালো সেবা আশা করা যায় না। প্রণোদনা না দিলে এসব স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর মনোবল ভেঙে পড়বে।

শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, হাসপাতালগুলোতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনা পাওয়া উচিত। তাদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেনি মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে করোনায় মারা গেছেন। তারা হলো হাসপাতালের অন্যতম মেইন ফোর্স। তাদের অবশ্যই প্রণোদনা দিতে হবে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে প্রণোদনা পায় সেই চেষ্টা করছি। অধিকাংশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই বলছেন, আউটসোর্সিংয়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রণোদনা না দিলে অন্যায় করা হবে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হোক আর যেখান থেকে হোক সে তো কাজ করছে হাসপাতালে। রোগীর পাশে থাকছে। তাহলে তারা কেন প্রণোদনা পাবে না। এরই মধ্যে বেশ কিছুসংখ্যক আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় মারা গেছেন। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত সবারই প্রণোদনা দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক বলেন, অবশ্যই হাসপাতালে কর্মরত সবাইকেই প্রণোদনা দেওয়া উচিত। করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে সুস্থ করার ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মীদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। - ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়