শিরোনাম
◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ ◈ আরব আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান  ◈ অবশেষে কমল সোনার দাম ◈ মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে চার সংগঠনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র! ◈ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের চিঠি ◈ ডাকসুতে ভোট কারচুপির অভিযোগে সিসিটিভি যাচাই, উঠে এলো যে তথ্য ◈ সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর ◈ আমি যে কাজ করেছি তা দেশের ইতিহাসে কোনোদিন হয়নি : আসিফ নজরুল ◈ চট্টগ্রামে মার্কিন বিমান ও সেনা উপস্থিতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা, আসলে কী ঘটছে

প্রকাশিত : ০৩ মে, ২০২১, ০২:৩১ দুপুর
আপডেট : ০৩ মে, ২০২১, ০২:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র খাবার পানি সংকট রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভোগান্তি

এইচ এম মিলন:[২] ৫ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের গুরু দায়িত্ব ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। কিন্তু এই হাসপাতালে বর্তমানে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বৈশাখের এই তীব্র গরমে হাসফাঁস করা রোগী ও রোগীর স্বজনদের নিরুপায় হয়ে হাসপাতালের বাইরের বিভিন্ন বাড়ি থেকে পানি এনে পান করতে হচ্ছে।

[৩] এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। কালকিনি হাসপাতালের ৪টি গভীর নলকুপের মেধ্যে ৩টি বিকল হওয়ায় পানি বের হতে সমস্যা হওয়ায় পানির এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র একটি নলকুপ সচল থাকেলও তা আবার মাঝে মেধ্যে রোগীর স্বজনদেও অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। এতে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের ভর্তি হওয়া প্রায় তিন শতাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের।

[৪] বিশেষ করে রাতের বেলা রোগীর ভোগান্তি আরও বাড়ে।আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কালকিনি হাসপাতাল ভবনের পাশ দিয়ে ৪টি গভীর নলকুপ অনেক আগে স্থাপন করা হয়। তিনটিই নলকুপ মরিচা ধরে দীর্ঘদিন ধরে অকোজো অবস্থায় পড়ে আছে। ঘুরে দেখা গেল হাসাপাতালের নিচতলায় একটি নলকুপ নামে মাত্র সচল রয়েছে। হাসপাতালে ব্যবহারের জন্য একটি মোটর দিয়ে পানি উঠানো হয়।

[৫] তাও আবার মাঝে-মাঝে নষ্ট হয়ে আর পানি উঠছেনা। তাই বাধ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগ রোগীর স্বজনদের আশপাশের কোন বাড়ি অথবা বিভিন্ন দোকান থেকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হচ্ছে। তবে যাদের সামার্থ কম, তাদের জন্য এই চাপ দুঃসহ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ঝুকিপুর্ন ভবন চলছে রোগীদের চিকিৎসাসেবা। ভবন অনেক পুরানো হয়ে যাওয়ায় মাঝেমধ্যে ছাদের পলেস্তারা খসে-খসে নিচে পড়ছে।

[৬] অনেক সময় পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ে হঠাৎ রোগীদের গায়ে পড়ে আহত হচ্ছে। বড় আকারে পলেস্তারা ধসে পড়ে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। অপরদিকে জীবনের ঝুকি নিয়ে বাধ্য হয়ে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের।হাসাপাতোলে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানাযায়, প্রতিদিন কালকিনি হাসপাতালে দুই শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। আর প্রায় তিন শতাধিক রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নেন।

[৭] হাসপাতালে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগী ও স্বজনদের বিশুদ্ধ খাবার পানির চাহিদা মেটাতে হাসপাতালে ব্যবস্থ্য আছে চারটি টিউবওয়েলের। এর মেধ্যে তিনটি পুরোপরি বিকল। কিন্ত আরেকটির ভালো থাকলেও বেশি ব্যবহারের ফলে ঘনঘন নষ্ট হয়ে যায়। রোগীরা প্রতিদিন পানি আনার কষ্টের কথা ওয়ার্ডে বলাবলি করে। কিন্তু স্যারেরা কেউ সে কথা গায়ে মাখে না। এই গরমে পানির চাহিদা রোগীদের বেশি থাকে।

[৮] ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাতে লক্ষিপুর থেকে এসেছেন দেলোয়ার মিয়া। তিনি বলেন, ছেলেকে নিয়ে দুই দিন আগে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছি। রাতে খাবার পানি দরকার। কিন্তু হাসাপাতালের ভেতরের টিউবওয়েল ও মোটর নষ্ট থাকায় পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। আমি গরীব মানুষ পকেটে টাকাও নাই। তাই ভোরবেলায় পাশের একটি বাড়ি থেকে জগ ভরে পানি এনে খেয়েছি।

[৯] পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ ইউনুস আলী বলেন, হাসপাতাল হচ্ছে আমার ওয়ার্ডের মধ্যে। আগে হাসাপালে ৪টি গভীর নলকুপ ছিল। তা নষ্ট হয়ে এখন মাত্র একটি আছে। একটি নলকুপ দিয়ে এতগুলো রোগীর পানি পিপাষা মিঠানো সম্ভব না। পানি জন্য রোগীর স্বজনদের বিভিন্ন স্থানে দৌড় ঝাপ করতে হচ্ছে।

[১০] এ বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলবিধান মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেন, পানি উঠানো মোটর নষ্ট ছিল, কর্তৃপক্ষকে বলে অনেক সাধনার পরে ঠিক করেছি। আর গভীর নলকুপের বিষয়ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ভবনের ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ছে । আমরা বাধ্য হয়েই এই ঝুকিপুর্ন ভবনেই দিচ্ছি স্বাস্থ্যসেবা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়