মো.ইউসুফ মিয়া : [২] গত ৪দিন ধরে রাজবাড়ী বালিয়াকান্দির আওয়ামীলীগ নেতার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর উপর দফায় দফায় হামলা, বাড়ী-ঘর ভাংচুর, লুটপাট ও পাল্টাপাল্টি মামলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রামবাসী।
[৩] ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের চষাবিলা গ্রামে।
[৪] জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল বারেক বিশ্বাস ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হাই মন্ডল গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে আসছে।
[৫] নারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাই মন্ডল বলেন, বারেক বিশ্বাস সভাপতি হওয়ার পর থেকেই একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। রবিবার (২৫এপ্রিল) মজনু মোল্যার ছেলে তৌকির মোল্যা মোটর সাইকেল নিয়ে মৃগী বাজারে ইফতারী ক্রয় করতে যাচ্ছিল।
[৬] চষাবিলা গ্রামের আজাদের বাড়ীর সামনে পৌছালে মোটর সাইকেলে হর্ণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দাউদ বিশ্বাসের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে সিদ্দিকুর রহমান ও মজনু মোল্লার বসত বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায় বারেক বিশ্বাসের লোকজন।
[৭] হামলা চালিয়ে মজনু মোল্লা ও সিদ্দিকুর রহমানের বসত বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির জানালা দরজা ভেঙে, টিনের বেড়া কুপিয়ে কেটে ঘরে থাকা শোকজ, টেলিভিশন, ফ্রিজ, একটি টিভিএস মোটর সাইকেল, খাট, আলমারীসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
[৮] ঘরে থাকা ৪টি মোবাইল ফোন, ১টি ল্যাবটব, ৫ভড়ি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ৩লাখ টাকাসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মজনু মোল্যা বাদী হয়ে ১০জনকে আসামী করে সোমবার ( ২৬ এপ্রিল) বালিয়াকান্দি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি আরো বলেন, ইতিপুর্বে আরো ৫টি বাড়ীতে ৫টি হামলা চালিয়েছে।
[৯] মঙ্গলবার রাতে আমার দলীয় লোক আজিজাল মন্ডল ও তৈয়ব মন্ডলের বসতবাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে চষাবিলা, ঘিকমলা, পাটকিয়াবাড়ীসহ আশপাশের ৫টি গ্রামের মানুষ একত্রে হামলার জবাব প্রদান করেছে।
[১০] নারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল বারেক বিশ্বাস বলেন, আমি সভাপতি হওয়ার পর থেকেই নজরুল মৌলিক ও হাই মন্ডল আমার বিরোধিতা করে আসছে। ঈদগাহের জমি দখলসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করার কারণে তারা আমি ঢাকায় থাকার কারণে আমার দলীয় লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে।
[১২] ওই বাড়ীর সামনে দিয়ে ইফতার শেষে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় পুর্ব বিরোধের জের ধরে সাদ্দাম বিশ্বাস, দাউদ বিশ্বাস ও আজাদ শেখকে কুপিয়ে জখম করে। তাদের কাছে থাকা ৩টি মোবাইল ফোন, ২টি স্বর্ণের চেইন, নগদ ২লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করা হয়েছে।
[১৩] এব্যাপারে ইউসুফ বিশ্বাস বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বালিয়াকান্দি থানায় ৮জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
[১৪] এ নিয়েই মঙ্গলবার রাতে পুলিশ আসার কথা শুনে লোকজন বাড়ীতে না থাকার সুযোগে হাই মন্ডল ও নজরুলের লোকজন হামলা চালিয়ে জাহাঙ্গীর মন্ডল, হানেফ মন্ডল, মান্নান শেখ, ছানা শেখ, বাবু শেখ, সাবু শেখ, তুহিন শেখ, মিরাজ শেখ, সোবহান, সাবু মন্ডল, আইদুল খান, ডাবলু খান, কামাল খান, রবি খান, যদু খান, কুদ্দুস মোল্যা, লাল মিয়া মোল্যা, হাই মন্ডল, টুকুর মন্ডল, সাচ্চু মন্ডল, জহুরুল জোয়াদ্দারের বাড়ীর টিনের ঘর, লোকমান জোয়াদ্দারের মুদি ও ভ্যারাইটিজ ষ্টোর দোকান,সোবহান জোয়াদ্দারের চায়ের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এতে ২৭টি বসত ঘরের ক্ষতি সাধন করেছেন।
[১৫] বালিয়াকান্দি থানার ওসি তারিকুজ্জামান বলেন, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আগের হামলার বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার রাতের হামলা চালিয়ে বাড়ী ও দোকানপাট ভাঙচুর করার বিষয়ে মামলা দায়ের করা হবে। আসামী গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :