অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: আজকে করোনায় ভারতে যা ঘটছে তার জন্য একান্তভাবে দায়ী ধর্মান্ধ দল বিজেপি এবং তাদের নেতা মোদি। তারা কুম্ভ মেলার নামে লাখ লাখ মানুষ একত্রিত হয়েছে যেখানে স্বাস্থ্যবিধিকে টুটালি বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে। দুনিয়ার সকল ধর্মান্ধের চরিত্র একই। তারা করোনা ফরোনা বিশ্বাস করে না। নির্বাচনের নামে নির্বাচনী সভা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আসছেন আর লাখ লাখ মানুষ যোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ দিয়েছেন। জীবিত এবং ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নিজের নামে স্টেডিয়াম করে সেটা উদ্ধোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আইপিএল খেলা চলছে। আর গত জানুয়ারি মাসেই করোনা নেই বলে ঘোষণা দিয়েছে। এসবের যোগফল হলো ডিজাস্টার।
অক্সিজেনের অভাবে মানুষের হাহাকারে আকাশ বাতাস ভারাক্রান্ত, প্রকম্পিত। দিল্লি যেন মৃত্যুপুরী। আজ ভারত বলে বিশ্বের সকল প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এসব সংবাদ প্রকাশ, টেলিভিশনে টক-শো করছে। শুধু তাই না চীন, পাকিস্তানের মতো শত্রু বলে খ্যাত রাষ্ট্র সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। অন্যান্য প্রভাবশালী রাষ্ট্র যেমন জার্মানি, আমেরিকাও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। ব্রাজিলের অবস্থা ভারতের চেয়ে খারাপ হওয়া সত্ত্বেও এতো মনোযোগ পায়নি। এর কারণ কী? এর কারণ ভারত শিক্ষায় অনেক এগিয়ে। ভারতের প্রভাবকে কেউ ইগনোর করতে পারে না।
ভারতের লাখ লাখ লোক মিডল ইস্টে ভালো পজিশনে কাজ করছে। ভারতের লাখ লাখ মানুষ ইউরোপ-আমেরিকায় শিক্ষক, গবেষকসহ বড় বড় পদে কাজ করছে এবং অনেকেই সেসব দেশের নাগরিক। আমি ভাবছি একই অবস্থা বাংলাদেশের হলে আমরা কী সমানুপাতিক সাহায্য পাবো, সমানুপাতিক এটেনশন পাবো? আমাদের এখনই আমাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ওপর নজর দিতে হবে। এই বিশ্ব কেবল তেলা মাথায় তেল দেয়। আমাদের দিকে কেউ ফিরেও তাকাবে না। আমরা কিন্তু দোকানপাট খুলে দিছি। দুনিয়ার কাছে সম্মান অর্জনের একমাত্র পথ হলো সুশিক্ষিত মানসম্পন্ন জনগোষ্ঠী। মনে রাখতে হবে, বড় বড় স্কলাররা হলো দেশের সবচেয়ে বড় এম্বাসেডর। বেশি করে শিক্ষা, গবেষণা ও স্বাস্থ্যে বরাদ্দ দিন কেবল তখনই সত্যিকারের উন্নয়ন দেখবেন। অন্যথায় সব ফাঁকা বুলি। লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়