শিরোনাম
◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, গণনা চলছে ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫০ রাত
আপডেট : ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কুমিল্লায় হলুদ রঙের তরমুজ চাষে বাজিমাত

রুবেল মজুমদার: সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো।সূর্য ঠিক তখন মাথার উপর,কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামবলরামপুর,গ্রামটি সীমান্তবর্তী এলাকা হলেও মনে হয় যেন কৃষিনির্ভর উত্তরবঙ্গের প্রচীনতম সুন্দর গ্রাম। মৃদু রোদে দূর থেকে মনে হয় এ যেন এক কৃষির জনপদ। শত শত একর জমিজুড়ে বিভিন্ন মৌসুমি শাকসবজি মাঠ।এ যেন এক কৃষির উর্রব ভূমি । গ্রাম জুড়ে এমন বৈচিত্র দেখতে স্থানী গণম্যাধ্যমকর্মীদের পাশাপাশি প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছে দর্শনার্থীরা।হলুদ তরমুজ কেমন এই নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে কৌতুহলের শেষ নেই । সবুজের মাঝে তরমুজের ঝলকানিতে হলুদ রঙে ঝলমল করছে চারপাশ।পুরো এলাকায়জুড়ে এখন বইছে হলুদ তরমুজের সু-বাতাস।
কৃষক কাজী আনোয়ার হোসেন।বৈশাখের মাঝামাঝি সময়। গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজ। এই গরমে তৃষ্ণা মেটাতে তরমুজের কোনো জুড়ি নেই। আছে অনেক স্বাস্থ্যগুণও। রসালো এই হলুদের রঙের ফল কুমিল্লার এ প্রথম চাষ করেছেন বলরামপুর গ্রামের কৃষি আনোয়ার হোসেন ।

বিদেশি জাতের এ হলুদ তরমুজটি থ্যাইল্যান্ডের ইয়োলো কিং বলা হয়। এটি বারোমাসই চাষ করার উপযোগী।পোকামাড়ক শীতে সমস্যা করলেও নিয়মিত পরির্চযা ঐ সময় ভালো ফলন পাওয়া যায়। রং বদলালেও এই তরমুজের স্বাদ কিন্তু বদলায়নি বরং এ তরমুজ কড়া মিষ্টি ও সুস্বাদু।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কৃষক আনোয়ার হোসেনের এর জমির চারপাশে নেটে দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে।মাচা পদ্ধতিতে হলুদ রংয়ের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। প্রতিটি মাচা নেট দ্বারা আবৃত।পোকা-মাকড় আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য মাচার মাঝখান দিয়ে ফেরোমেন ও ইয়েলো ট্যাপ লাগানো। মাচার ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় শতশত তরমুজ। তরমুজে মাচাগুলো ভরপুর।

প্রতিটি গাছে চার থেকে পাঁচটি করে ঝুলে আছে।একেকটি তরমুজ এক থেকে দেড় কেজি ওজনের মতো হবে। প্রত্যেকটি নেট দ্বারা আবৃত করে রাখা হয়েছে।আবার ছোট ছোট তরমুজ গুলো নেট ছাড়া আছে।

জানা গেছে, কৃষক কাজী আনোয়ার হোসেন এই বছর ২০ একর হলুদ রঙের ইয়োলো কিং ও ৪৫ একক ব্ল্যাক বেবি,ব্ল্যাক সুইট-২ তিন প্রজাতির তরমুজের চাষ করেছিলেন।হলুদ তরমুজ, কালো তরমুজ ও সাদা তরমুজ। সবগুলো প্রজাতির তরমুজের ফলও ভালো হয়েছে। জমিতে মাচা তৈরি করে উঁচু বেডের মাটি মালচিং পলিথিনের শিট দিয়ে ডেকে দেওয়া হয়।তার মাঝে গোল করে কাটা স্থানে তরমুজ গাছ গুলো রোপন করতে করছেন।মাঁচাতে ঝুলছে বিভিন্ন প্রজাতির তরমজু গুলো ।যাতে ছিঁড়ে না যায় তার জন্য নেটের ব্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিটি তরমুজে ।

কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, গত বছর আমি প্রথম ব্ল্যাক সুইট-২ নামের তরমুজটি চাষ করছি। এতে আমরা ৩৫ হাজার টাকার খরচ হলেও তরমুজ বিক্রি করে আমার ২ লক্ষ টাকা লাভবান হয়েছে। হলুদ রঙের তরমুজ চাষের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন ,আমি ইউটিউব দেখতে দেখতে হলুদ তরমুজ চাষ করা পদ্ধতি আমার ইউটিউব ভেসে আছে।বিষয়টি আমি বার বার দেখার পর হলুদ রঙের এই ফল চাষের আগ্রহী হয়।পরে সিরাজগঞ্জ জেলার কৃষক শাহিন আলমের নাম্বার ইউটিভে থেকে নিয়ে তাকে কল দিয়ে এই বিষয় বিস্তারিত জানি।এবং ওনার সহযোগিতা ও পরামর্শে এই বছর ২০ এক জমিতে হলুদ রঙের তরমুজের চাষ করি। ফলনও ভালো হয়েছে। সব মিলে এবার প্রায় ১০ লক্ষ টাকার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। বীজ ও শ্রমিক সহ সবমিলে আমার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।গত মাসের ২০ তারিখে চারা রোপন করছি।আশা করি আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে তরমুজ কাটতে পারবো ।

তিনি আরো বলেন,হলুদ তরমুজ চাষ একটি কঠিন হলেও, সঠিক পরিচর্যা করলে সহজে লাভবান হাওয়া যায়, মূল আমরা মাচা তৈরি করে তাতে সুতা বেঁধে দেই তরমুজে ।যাতে বড় হলে নেটের ব্যাব দিয়ে সুতায় ঝুলিয়ে দেই। এবার তরমুজ হলুদ হলেও এটির ভিতরে লাল ও স্বাদে মিষ্টি হয়।কুমিল্লার নয় শুধু আমি চট্টগ্রামে বিভাগের মধ্যে একমাত্র হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন। কুমিল্লাতে আগে কখনো কেউ এই তরমুজ চাষ করে বলে শুনেনি। তরমুজের ক্ষেতের চার পাশের বিভিন্ন ধরনের সবজি লাগেছি।সরকারী সহযোগিতা পেলে আমি আরো বড় পরিসারে হলুদ তরমুজ চাষ করে স্থানীয় চাহিদা মিটে বিদেশে রপ্তান্তি করতে চায় ।

একই এলাকায় স্থানীয় কৃষক রমজান আলী বলেন, বাজারে এই তরমুজের দামও ভালো।আনোয়ার এমন উদ্যোগ দেখে আমি চিন্তা করছি আগামী বছর হলুদ তরমুজ চাষ করবো ।শুনছি এই ফলে নামি কম খরচে আয় বেশি।এছাড়া তার তরমুজ আশেপাশে এলাকায় মানুষ কাছে বিক্রি হয়ে যায়,বাড়তি কোনো পরিবহন খরচ লাগে না ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, তরমুজ চাষের জমিটি আমরা পরিদর্শন করেছি। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা ক ।এবং আগামী তাকে হলুদ সহযোগিতা করা হবে। সামনে আর কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে আনোয়ারে তরমুজ এখনো ভালো ফলন হবে ,এবং এই হলুদ তরমুজ চাষ কুমিল্লাতে প্রথম। তার ফসল তোলার সময় মৌসুমী তরমুজ কমে আসবে। সে কারণে আনোয়ার ভালো দাম পাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়