ফরিদুল মোস্তফা :[২] টেকনাফের সাবরাং মুন্ডার ডেইল ঘাটস্থ সমুদ্র সৈকত থেকে খালাসের সময় ইয়াবার বিশাল একটি চালান লুট হয়েছে।কয়েকটি সূত্রের দেয়া তথ্যমতে লুট হওয়া চালানে প্রায় কোটি টাকার দুই বস্তা ইয়াবা ছিল। ইয়াবা লুটের বিষয়টি স্বীকারও করছে বিজিবি ও স্থানীয় মাঝিমাল্লারা।স্থানীয় জেলেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেট এ ঘাট দিয়ে নিয়মিত ফিশিং বোটে করে মাছ শিকারের আড়ালে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করে আসছিল।
[৩] গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মিয়ানমার হতে ইয়াবার একটি বড় চালান আসার সংবাদে স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনী কৌশলে অবস্থান নেয়। পরে আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে ভিন্ন পথ অবলম্বন করে ইয়াবার চালানটি খালাসের সময় লুটপাটের ঘটনা ঘটে।মূলত ইয়াবার বড় চালানটির মালিক শাহপরীরদ্বীপ দক্ষিণ পাড়ার নুরুল হাকিম মাঝির ছেলে জাফর আলম, মৃত কাদির হোসেনের পুত্র শাহ আলম ও বাজার পাড়ার রহিম উল্লাহর পুত্র মনজুর আলম।
[৪] শাহ আলম সাবরাং ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুল হকের চাচাত ভাই ও ব্যবসায়িক সহযোগী এবং মনজুর আলম ফজলুল হক মেম্বারের শালা।তবে এ চালানের খালাস ও নিরাপদ স্থানের পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব ছিল স্থানীয় ইউপি সদস্য দানুর।এ ইয়াবা লুটের ঘটনা নিয়ে মুন্ডারডেইল ঘাটের ৫০টি ফিশিং বোটের মাঝিমাল্লার (প্রায় আড়াই শতাধিক পরিবারের) মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে জেলেদের মাঝে ক্ষোভ, হতাশা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। অসহায় হয়ে পড়েছে জেলে পরিবার গুলো।
[৫] ইয়াবার লুটের ঘটনায় মুন্ডার ডেইল এলাকার ইব্রাহীম, আব্দুর রহিম, ফজলুর রহমান প্রকাশ ফজরানসহ বেশকয়েকজন লুটকারী চক্র জড়িত।স্থানীয় জেলেরা আরো জানান, মিয়ানমার থেকে ফিশিং বোটে করে ইয়াবার বড় চালানটি নিয়ে আসে আনোয়ার মাঝির নেতৃত্বে মোঃ আলম, কাদির ও রশিদ উল্লাহ।স্থানীয় জেলে নুর হোছন মাঝি বলেন, আমরা মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করি।
[৬] ফিশিং বোট থেকে ইয়াবার লুটপাটের ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুন্ডার ডেইল ঘাট থেকে কোন ফিশিং বোট সাগরে মাছ শিকারে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সাগরে যেতে না পেরে বউ বাচ্চাদের নিয়ে উপোস রয়েছি।যা, এক জনে দোষ করে শতজনে কষ্ট পায়।জেলে কালু মাঝি বলেন, যারা প্রকৃত ইয়াবার চালান পাচার ও লুটের ঘটনায় জড়িত তদন্তপূর্বক তাদের আইনের আওতায় আনা হউক।সাগরে মাছ ধরতে যেতে না পারায় পরিবার নিয়ে মানববেতর জীবনযাপন করছি।
[৭] তবে অনেকের দাবি, একটি বাহিনী সবকিছু জেনেও চুপ হয়ে আছে। তাদের এমন রহস্যজনক আচরণ কাজে লাগিয়ে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ইয়াবার চালান লুটে জড়িত অনেকেই।নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, এই চালান ছাড়াও আরও বেশ কয়েকবার এই ঘাট দিয়ে ইয়াবার চালান এ ঘাটেপ্রবেশ করে।ইয়াবা লুটের ঘটনা সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, পবিত্র রমজান মাস ও লকডাউনে আইনশৃংখলা বাহিনী ব্যস্ত থাকায় এত বড় ইয়াবার চালান লুটের পর এখনও অপরাধীরা ধরা পড়েনি।
[৮] যা হাস্যকর। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই এখনও এলাকায় রয়েছে।এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন দানুর কাছে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে সংবাদ কর্মীদের উপর তেড়ে আসে এবং নিরহ জেলেদের গালিগালাজ করে মারধর করা হয়। জেলেরা নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের এমন আচরণে মন ক্ষুন্ন হয়। জেলেরা দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
[৯] এ ঘটনার বিষয়ে সাবরাং মুন্ডার ডেইল ঘাট সংলগ্ন খুরেরমুখ বিওপির দায়িত্বরত সুবেদার মতিউর রহমান জানান, ইয়াবা লুটের ঘটনার পর থেকে বিজিবি এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে এবং ইয়াবা লুটের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন