শিরোনাম
◈ রা‌শিয়া থে‌কে তেল আমদা‌নী বন্ধ কর‌বে না ভারত,  ট্রাম্পের দা‌বি অস্বীকার মো‌দির, কোন পথে কূটনীতি? ◈ সাভার ও আশুলিয়া নিয়ে গঠিত হচ্ছে ‘সাভার সিটি কর্পোরেশন’ ◈ বিএনপি নাকি জামায়াত - কোন দ‌লের নির্বাচনী জোটে যাওয়া নিয়ে কী ভাবছে এনসিপি? ◈ আবু ত্বহা ও সাবিকুন নাহারের তালাক সম্পন্ন, সর্বশেষ যা জানা গেল (ভিডিও) ◈ চ্যাম্পিয়নস লিগে ৬-১ গো‌লে জিত‌লো বার্সেলোনা, লো‌পে‌সের হ‌্যাট‌ট্রিক  ◈ চ‌্যা‌ম্পিয়নস লি‌গে লেভারকুসেনের জালে পিএসজির ৭‌ গোল ◈ ক্যাচ মিস আর আর সুপার ওভা‌রে বাউন্ডারী মার‌তে না পারায় হে‌রে‌ছি: মিরাজ ◈ সুপার ওভা‌রে রিশাদ হো‌সেন‌কে না দেখে অবাক হ‌লেন আকিল ◈ বিএনপির ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত, অনেককে দেয়া হলো গ্রীন সিগনাল ◈ এশিয়া কাপের ট্রফি চেয়ে পি‌সি‌বির চেয়ারম‌্যান নাকভিকে মেইল পাঠাল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড

প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:১৫ সকাল
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: রাজনীতি, তাণ্ডব ও তিনটি খবরের জিজ্ঞাসা বা আলোচনা

দীপক চৌধুরী: এই মুহূর্তে দু’তিনটি খবর দেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বেফাঁস ও চাঞ্চল্যকর উক্তি, হেফাজতে ইসলাম সমাচার ও অতিমারি কোভিড-১৯ আতঙ্ক।

দীর্ঘ নয় বছর পর বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী গুম হওয়া নিয়ে দলটির নেতা মির্জা আব্বাসের বক্তব্য নানানমহলে এখন আলোচিত। সন্দেহ আরো গভীর হলো। সম্প্রতি মির্জা আব্বাস অনলাইনে লাইভ মিটিংয়ে ‘মুখ ফসকে’ সত্যিটা নাকি বলে ফেলেছেন। এমন কথা উঠেছে। পরে দলের মধ্যে সমালোচনার মুখে তিনি ভয়ংকর বিপদে পড়েন। লন্ডন থেকে কড়া হুমকি এবং নানান প্রশ্ন তাকে আক্রান্ত করে। দলের ভিতর-বাইরে প্রশ্ন উঠেছে হঠাৎ কী হলো মির্জার। মানুষের মধ্যেও জিজ্ঞাসা। সর্বশেষ সেই বক্তব্যের দায় গণমাধ্যমের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। এত কী শেষ রক্ষা হবে? দলপ্রধান খালেদা জিয়ার যেমন শেষ রক্ষা হয়নি তারেক রহমানেরও না।

এরপর হেফাজতে ইসলাম আলোচনার তুঙ্গে। কী কাণ্ডটাই না দেখা গেলো কিছুদিন। ভয়ংকর ও অকল্পনীয় আচরণ। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “সরকার কোনো আলেম বা ধর্মীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করছে না, গ্রেপ্তার করছে দুষ্কৃতকারীদের।” কথা একদম সত্য। এদেশের মানুষ এটাই সত্য বলে জানে।

হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন ড. হাছান মাহমুদ। গত সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় হেফাজত নেতাকে নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মামুনুল হক সাম্প্রতিক সময়ে যেসব কর্মকাণ্ড করেছে এবং ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে; সেগুলো দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র ও ইসলামের জন্য হুমকিস্বরূপ।’

কয়েক মাস আগে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে দেশে আলোচনায় আসে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। যাঁর আঙুলের নির্দেশে বিশ্বের মানচিত্রে আমরা খুঁজে পেয়েছি একটি নতুন ঠিকানা, সেই বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার হুমকি কী মেনে নেওয়া যায়? কতবড় দুঃসাহস মামুনুলের! গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা ঘিরে বিক্ষোভ-সহিংসতার সময়ও আলোচনায় ছিলেন জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল। গত রোববার

মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে মামুনুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এখন পুলিশ রিমাণ্ডে। একে একে সবকটির মুখ থেকে ‘থলের বেড়ালের কাণ্ড’ বের হবে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এযাবৎ প্রায় হেফাজতের ২০ নেতা পুলিশের হাতে।

এদেশের মানুষ দেখেছে, হেফাজতের তাণ্ডব। যেসব দুষ্কৃতকারী সমগ্র দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে, নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি-সহায়-সম্পত্তি, যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষের জমির দলিলপত্র পুড়িয়েছে, ফায়ার স্টেশন-রেলস্টেশনে হামলা করে ক্ষতি করেছে এবং যারা মানুষের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, তাদের এবং তাদের নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার করছে সরকার। এই হেফাজত নেতা মামুনুলের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে। সবকটি মামলা তদন্ত করবেন সিআইডির কর্মকর্তারা। ঢাকার বিভিন্ন থানা ও নারায়ণগঞ্জে দেড় ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে যে সম্মৃদ্ধি ও স্বাতন্ত্র নিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তাকে অর্থবহ ও টেকসই করতেও এখনই এসব অপশক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলা জরুরি। এই অপশক্তিগুলো কেবল মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনাকেই নস্যাৎ করতে উদ্যত নয়, তারা বাংলাদেশেকে বন্ধুহীন বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করতেও অতিমাত্রায় সক্রিয়। সুতরাং সাধু সাবধান। মনে রাখতে হবে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার চেতনা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।

এরপর আসছি করোনার কথায়। কোনো কূল-কিনার পাচ্ছি না আমরা। ভয় নয়, জয়ের জন্যই আমাদের লড়তে হবে। কোভিড-১৯ নিয়ে শুরু থেকেই নানাগুজব। গুজবের স্থান নেই, এটা বিজ্ঞানের যুগ। ভ্যাকসিন নিয়ে দেশে কিনা হয়ে গেলো? কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে বলেছেন, ইন্ডিয়ান ভ্যাকসিন কী না কী সেখানে। কি দিয়ে বানানো হয়েছে, আমরা কী জানি? ছিঃ ছিঃ নানা ভয়ংকর কথা। আরো কত কিছু। তবে আশার কথা, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সেই পার্ট জয় করে চলেছি।

আজ এটা সত্য যে, এই ভাইরাস থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছি না। করোনায় লণ্ডভণ্ড বিশ্ব। আমরা রাজনীতিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ভাষাবিজ্ঞানী, শিক্ষক, সরকারী- বেসরকারী কর্মকর্তা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যসহ অনেক সম্মুখযোদ্ধাকে হারিয়েছি। গত এক বছরে করোনা আক্রান্ত আমাদের শতাধিক সংসদ সদস্য। হঠাৎ জ্বর আসায় করোনার সংক্রমণ হলো কি না, এই ভেবে নমুনা পরীক্ষা করান রাজশাহী-২ আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা। ১৪ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষার ফল হাতে পাওয়ার পর বুঝতে পারেন, তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। পরে তাঁকে ঢাকায় আনা হয়। এখন হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ৮ এপ্রিল দ্বিতীয় ডোজ করোনার টিকা নিয়েছিলেন তিনি। জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে সর্বশেষ করোনায় আক্রান্ত হন বাদশা। সংসদ সচিবালয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ১০৯ জন সাংসদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন মারা গেছেন। আর মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ সদস্য, এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ ১২ জন। এতে আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ১৩ জুন মারা যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। একই দিনে মারা যান টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ । আর জুলাইয়ে মারা যান নওগাঁ-৬ আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলম। সর্বশেষ এবার ১৪ এপ্রিল মারা গেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কুমিল্লা -৫ আসনের সাংসদ আবদুল মতিন খসরু। এর আগে গত মাসে মারা যান সিলেট-৩ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। সুতরাং চাই সতর্কতা, সতর্ক উচ্চারণ বিশ্বাস ও ভালোবাসা। জয় আমাদের হবেই। কারণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভরসার জায়গা। এদেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা রয়েছে তাঁর।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়