ফরিদুল মোস্তফা:[২] টানা ৫ মাস পর বৃষ্টির দেখা পেল কক্সবাজারবাসী। চৈত্রের তপ্তরোধে মাঠঘাট যখন পুড়ছিল, এমনই সময়ে রোববার রাতের দুইঘন্টার বৃষ্টিতে স্বস্তি বয়ে এনেছে জনমনে। তবে এই কালবৈশাখীর ঝড়ে ভেসে গেছে লবণ মাঠের কয়েক কোটি টাকার লবণ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিক্ষেতও।
[৩] রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে শুরু হওয়া মাঝারী আকারের এই বৃষ্টিপাত চলে টানা প্রায় ২ ঘন্টা পর্যন্ত। এই সময়ে কক্সবাজারে ২৩ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া বিভাগ।
[৪] কক্সবাজার আবহাওয়া বিভাগের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, টানা ৫ মাস পর রোববার রাতে কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে সোমবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমেছে। পাশপাশি চৈত্রের তপ্তরোধে পোড়া প্রকৃতিতেও স্বস্তি এনেছে।
[৫] তিনি জানান, এরআগে সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয় গত বছরের ৪ নভেম্বর। এদিন মাত্র ১০ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। গত বছর নভেম্বর মাসে মোট ৩০ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এরমধ্যে ১ নভেম্বর ১২ মিলিলিটার ও ২ নভেম্বর ৮ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়।
[৬] তবে রোববার রাতের বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ উপজেলার কয়েক হাজার একর লবণ মাঠের কয়েক কোটি টাকার লবণ ভেসে গেছে এবং ঝড়ো হাওয়ায় কৃষিক্ষেতেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
[৭] কক্সবাজারস্থ বিসিক লবণ কেন্দ্রের পরিদর্শক ইদ্রিস আলী জানান, কালবৈশাখীর কারণে দু-একদিনের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।একই তথ্য জানান কক্সবাজার লবণ চাষী ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক মকসুদ আহমেদ।
[৮] তিনি বলেন, রোববার রাতের একপশলা বৃষ্টির পর সোমবার রোদ্রকোজ্জ্বল সকালে চাষীরা ফের লবণ উৎপাদনের জন্যে মাঠ প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের সাত উপজেলা এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার প্রায় ৫৭ হাজার ২৭০ একর জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। প্রায় ৫৫ হাজার চাষী লবণ চাষে জড়িত।
[৯] জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কাশেম জানান, রোববার রাতের কালবৈশাখীর ঝড়ে মৌসুমী সবজি ও কৃষিক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা অতি সামান্য। এতে সবজির বাজারে কোন প্রভাব না বলে মনে করেন তিনি।
বিশিষ্ট পরিবেশবিজ্ঞানী ড. আনসারুল করিমের মতে, এই বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ী বনাঞ্চলে খরার শিকার বৃক্ষগুলো নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
[১০] এরফলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃক্ষগুলোতে নতুন পাতা গজাবে। সবুজ পাতায় প্রকৃতিতেও আসবে নতুন প্রাণ। এছাড়া কৃষিক্ষেতেও ক্ষতির চেয়ে লাভই বেশি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন