ইসলামিক ডেস্ক: মাগরিবের ওয়াক্তে এলাকার মসজিদে ঢুকার মুখে লাশবাহী গাড়ি দেখে বুঝলাম কারো জানাযা হবে। ভেতরে ঢুকে লোকমুখে উনার পরিচয় জেনে চিনতে পারলাম। এলাকার অনেক পুরাতন একজন মুরব্বী, মসজিদের নিয়মিত মুসল্লী।
যাইহোক ইন্নালিল্লাহ পড়ে গিয়ে প্রথম কাতারে জায়গা পেয়ে দাঁড়ায় গেলাম। লাশ রাখার ঘরের মুখোমুখিই যে দাঁড়িয়েছি,এটা তখনও খেয়াল করি নাই।
ইমাম সাহেব তাকবীর দিলেন। হাত বাঁধলাম। হঠাৎ সামনে চোখ পড়তে ফ্রীজ হয়ে গেলাম। মাইয়েতের দেহ রাখার কক্ষটার দরজা আমার মুখ বরাবর।সিটকিনি না দেওয়ায় হালকা খুলে আসচে। আমার চোখ পড়লো খাটিয়ায় শুয়ে থাকা লম্বা নিথর দেহটার দিকে। সাথে নাকে ধাক্কা দিলো ঝাঁজালো কর্পূরের ঘ্রাণ।
ওইদিকে ইমাম সাহেব আবেগজড়িত কন্ঠে পড়ে চলেছেন-
"আল হাকুমুত-তাকাসুর..
হাত্তা যুরতুমুল মা-ক্ববির...
কাল্লা সাওফা তা'লামূন
ছুম্মা কাল্লা সাওফা তা'লামূন!..."
"প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে...
যতোক্ষণ না সেটা তোমাদের কবরে পৌঁছে দিচ্ছে!
কক্ষণো না! শীঘ্রই তা তোমরা জানতে পারবে...
কখনোই না! নিশ্চয়ই তোমরা তা জানতে পারবে..."
সামনে শুয়ে থাকা সদ্য আল্লাহর জিম্মায় চলে যাওয়া কবরের অপেক্ষমাণ বাসিন্দাটি যেনো নিথর দেহ নিয়ে চরম সাক্ষ্য দিচ্ছেন আল্লাহর এই হৃদয় কাঁপায়ে দেওয়া সতর্কবার্তাগুলোর... এই সূরা প্রায়ই মাগরিবের ক্বিরাতে পড়া হয়,কিন্তু আজ যেনো এক ভিন্ন মাত্রা আর ভিন্ন আবেগের দ্যোতনা নিয়ে আসচে সেটা। আমি শিহরণ বোধ করলাম,আশেপাশের অনেক মুসল্লীকেই শুনলাম ক্বিরাতের মাঝেই হাহাকার করে উঠতে।
হে মা'বূদ! তুমি তোমার নাদান বান্দাদের তোমার জিম্মায় নাওয়ার আগে তাদের ক্ষমা করে দাও! ইয়া হায়্যু ইয়া কায়্যূম! আপনি আপনার পরম মমতার ছায়াতলে আপনার মৃত্যুকাতর বান্দাদের আশ্রয় দিয়ে দিন
সাফায়াত হোসেন সৃজণের ফেসবুক ওয়াল থেকে