শিরোনাম
◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫

প্রকাশিত : ৩০ মার্চ, ২০২১, ১০:১৪ দুপুর
আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০২১, ১০:১৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হচ্ছেটা কি?

ড. শোয়েব সাঈদ, এটি ভীষণ বিব্রতকর যে আমার এই জন্মশহরটি বারবারই নেতিবাচক সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে। গত কয়েকদিনে এই শহরটি যেভাবে জ্বলে-পুরে লণ্ডভণ্ড হল তা নজিরবিহীন। পৌরভবন, সরকারি অফিস, উপাসানালয় কিছুই বাদ যায়নি। সাময়িক তথ্য সংকোচনের পর আস্তে আস্তে অনেক তথ্য সামনে আসছে।

ফখরে বাঙ্গাল মাওলানা তাজুল ইসলাম, সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ভাষা সৈনিক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবনদানকারী ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই পরিণতি তো আমরা চাইনি।

এই শহরে বেঁড়ে উঠা মানুষগুলোর নিশ্চয় জানা আছে স্পর্শকাতরতার পকেটগুলো। জন্ম থেকে বেঁড়ে উঠার শহরটির প্রতি মায়া থাকলে সংযত হয়ে যেমন শহরটি রক্ষা করা যায় আবার তেমনি বদ মতলবে জায়গামত উস্কানি দিয়ে সব কিছু তছনছ করা যায়।

হুব্বুল ওয়াতান মিনাল ঈমান। মক্কা ছেড়ে মদিনায় যাবার সময় রসুলুল্লাহ (সঃ) বারবার জন্ম শহর মক্কার দিকে তাকাচ্ছিলেন। মক্কা বিজয়ের পর শহরটিকে শান্তিপূর্ণ রাখার সব চেষ্টাই করেছিলেন। মানুষ মাত্রই নিজ এলাকার প্রতি প্রবল মমতার একটি অনুভূতি সক্রিয় থাকে। উচ্চশিক্ষার জন্যে প্রথম যখন শহরটি ছেড়ে যাই, ঢাকাগামী ট্রেনে বসে সেই দিনের অনুভূতি আজও মনে আছে। নিজের শহরটিকে এভাবে আঘাত করে ধার্মিক হওয়া যায় না।

মোদিবিরোধী বিক্ষোভে কেন এত জ্বলে উঠলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া? কিছু পত্রিকায় এই প্রশ্নটি এসেছে। বাংলাদেশের এত জেলা বাদ দিয়ে কেন জ্বলতে হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে এটি আমারও প্রশ্ন?

ধর্মীয় উস্কানী/ধর্মান্ধতা, রাজনৈতিক মতলববাজি কিংবা আগরতলার সীমান্তের কাছ থেকে সুদূর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের জটিল হিসেবনিকেশের ঊর্ধ্বে সত্যটি হচ্ছে “আমরা বিব্রত”।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার শান্তিপূর্ণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিরায়ত ঐতিহ্যের কাছে আমরা ফিরে যেতে চাই। ইনাফ ইস ইনাফ।

এই শহরের প্রভাবশালী মানুষগুলো জাতীয় পর্যায়ে বা শহরকেন্দ্রিক যে অবস্থায় থাকুক না কেন, কিছু একটা করার সময় এসেছে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ঘটনা ঘটার পর শুধু তদন্ত কমিটির রিপোর্টে প্রশাসনিক ব্যর্থতা বের করার চাইতে বেশী প্রয়োজন মূল কারণটি এড্রেস করা অর্থাৎ রাজনৈতিক, ধর্মীয় আর সামাজিক ক্ষতগুলোকে চিহ্নিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। ক্ষতগুলো ম্যালিগন্যান্ট হবার আগেই আমাদের বাঁচতে হবে, ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বাঁচাতে হবে।

ঐতিহ্যগতভাবে সংকটকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজনৈতিক আর ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের কমান্ডের অর্থাৎ জনতাকে শান্ত রাখবার সক্ষমতার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। নেতৃত্বের সেই ঐতিহ্যটি কি হারিয়ে যাচ্ছে?

নির্মম সত্যটা হচ্ছে এই সমস্ত ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হন তাঁরা চিরকালের মত ক্ষতি গহ্বরেই থেকে যান, বের হতে পারেন না। আর যারা লাভবান হন, ধর্ম আর রাজনীতিকে মাড়িয়ে লাভের আশায় আরেকটি অঘটনের জন্যে মুখিয়ে থাকেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়