ডেস্ক রির্পোট : চলতি অর্থবছরের আট মাসে উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থা মিলে বাংলাদেশের অনুক‚লে প্রায় ৩৭২ কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ-সহায়তা ছাড় করেছে। এই অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ ডলারের ছাড় হয়। সদ্য প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই চিত্র ফুটে ওঠেছে।
এতে দেখা যায়, ঋণ ও অনুদান মিলে ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রæয়ারি সময়ে ৩৭১ কোটি ৭১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ছাড় হয়েছে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।
চলতি পুরো অর্থবছরে ৭৪১ কোটি ডলার ছাড় করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে অর্থবছরের বাকি চার মাসে ৩৬৯ কোটি ডলার ছাড় করতে হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ফরেন এই বাজেটে একাউন্টস (ফাবা) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বৈদেশিক সহায়তা বৃদ্ধি পাওয়া মানে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের অগ্রগতি ভাল। বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি যত বাড়বে বৈদেশিক অর্থ ছাড়ও ততই বাড়বে। “এবারের অর্থ ছাড়ের বিশেষ একটি খাত হচ্ছে বাজেট সহায়তা। চলতি অর্থবছরের জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) একটি বিশেষ বাজেট সাপোর্ট ছিল। ওই খাত থেকেও অর্থ ছাড় করাই এবার এতো বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা ছাড় হয়েছে।”
ইআরডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন দাতাসংস্থা ও দাতাদেশগুলোর কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রæতি পাওয়ার ক্ষেত্রেও সফলতা পেয়েছে সরকার। এই সময়ে সরকার দাতাদের কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় করেছে মোট ৩৯৬ কোটি ৩২ লাখ ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ ডলার।
ইআরডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে দাতারা কোভিড-১৯ মহামারী মোকবিলায় বাংলাদেশকে অতিরিক্ত প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন। প্রতিশ্রুতি বেড়ে যাওয়ার এটাও একটা কারণ। চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে অর্থছাড়ের দিক দিয়ে জাপানের সকল দাতাকে ছাড়িয়ে যাওয়া।
প্রথম আট মাসে জাপান এককভাবে সর্বোচ্চ ৯৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৬ কোটি ৪১ লাখ ঋণ সহায়তা ছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। রাশিয়া ছাড় করেছে ৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। এছাড়াও চীন ৪৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার এবং ভারত ৪ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে।
ইআরডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত আট মাসে দাতাদের পূঞ্জীভূত পাওনা থেকে বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করেছ ১১৮ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত পরিশোধ হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের আট মাস পর্যন্ত দাতাদের কাছে পাওনা পরিশোধের পর নীট বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় হয়েছে ২৫২ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। সূত্র: বিডিনিউজ।