রাশিদ রিয়াজ : ২ লাখ ২০ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন এমভি ইভারগ্রিন নামের এ জাহাজটি মিসরের সুয়েজখাল অতিক্রম করার সময় ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। ১ হাজার ৩১২ ফুট লম্বা ও ১৭৭ ফুট চওড়া মালবাহী এ জাহাজটি সরাতে শতশত টাগবোট ব্যবহার করা হচ্ছে। জাহাজটি সুয়েজখালে আড়াআড়ি অবস্থায় থাকায় এর পেছনে আরো ১৪টি কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ আটকা পড়েছে। ডেইলি মেইল/বিবিসি
জাহাজটি উত্তরদিকে ভূমধ্যসাগরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে গিয়ে সংকীর্ণ খালটিতে আড়াআড়িভাবে আটকে যায়। এতে ওই এলাকায় মালবাহী জাহাজগুলোর জট তৈরি হয়। কর্তৃপক্ষ বলছে আটকে যাওয়া জাহাজটি সরাতে দিন কয়েক সময় লেগে যেতে পারে। মঙ্গলবার মিসরের স্থানীয় সময় সকাল পৌণে ৮টায় সুয়েজ বন্দরের একটু উত্তরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পানামায় রেজিস্ট্রিকৃত ইভারগ্রিন চীন থেকে মালবাহী কন্টেইনার নিয়ে নেদারল্যান্ডের বন্দর শহর রোটেরডামে যাচ্ছিল।
২০১৮ সালে নির্মিত এই জাহাজটি তাইওয়ানের পরিবহন কোম্পানি এভারগ্রিন মেরিন পরিচালনা করে। ইনস্টাগ্রামে আটকা পড়া জাহাজের পেছনে থাকা জাহাজ মের্স্ক ডেনভারের ওপর থেকে একটি ছবি তুলে পোস্ট করা হয়েছে। জোয়ারের সময় জাহাজটিকে আড়াআড়ি অবস্থান থেকে সোজা করা না গেলে মাল নামিয়ে তা করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সুয়েজ খাল লোহিত সাগরের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরকে যুক্ত হওয়ায় এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম এ পথেই বাণিজ্যিক জাহাজগুলো মালামাল আনা নেওয়া করে। ১৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথটিতে তিনটি প্রাকৃতিক হ্রদ আছে।
ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজটি হঠাৎ প্রবল বাতাসের কবলে পড়ার কারণে এর হাল বিচ্যুত হয়ে যায় এবং দুর্ঘটনাবসত জাহাজের তলা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তখন এটি খালের তলানির সঙ্গে লেগে চলতে থাকে। নর্থ ক্যারোলাইনার সমুদ্র ইতিহাসবিদ ড. স্যাল মার্কোগলিয়ানো বিবিসিকে বলেন, এ ধরণের ঘটনা বেশ বিরল কিন্তু এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। ইভারগ্রিন জাহাজটি বিশে^র বড় বড় জাহাজগুলোর অন্যতম। ফলে একাধিক টাগ বোট ব্যবহার করেও সুয়েজ খালের সংক্ষিপ্ত ওই স্থানে জাহাজটিকে সরানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। জাহাজটিকে সহজে টেনে বের করা সম্ভব হচ্ছে না। ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ জানায় দিনে বড় ধরনের ৭৫টি জাহাজ ৫.৮ মিলিয়ন টন মালামাল নিয়ে খালটি পার হয়। দিনে গড়ে ৫০টি জাহাজ সুয়েজ খাল অতিক্রম করে।
আপনার মতামত লিখুন :