ডেস্ক রিপোর্ট: নীল আকাশ্যের রাজ্য বলা চলে। আবার কখনো জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে কুয়াশার পাল। জানলার ওইপারে খাদ। এক পাহাড়ের কোলে এসে শুয়েছে অন্য পাহাড়। ছোট্ট ছবির মতো সাজানো হোম-স্টের বাইরে পা রাখলেই মনে হবে, এমন শান্ত জায়গা আছে পৃথিবীতে? এ যেন এক লুকানো স্বর্গ, পোশাকি নাম ‘তামাং গাঁও’।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্ক অনেকেরই চেনা। সেখানেই ছোট্ট গ্রামটির অবস্থান। ৭ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় একটা নিস্তব্ধতা! এই গ্রামে সকালে ঘুম ভাঙায় পাহাড়ি ঝরনার শব্দ। তাকে সঙ্গত করে হিমালয়ের অসংখ্য পাখির ডাক। জবথবু শীতে জানালার পাল্লা খুলতেই ঘরে ছোটাছুটি শুরু করে সোনালি রঙের রোদ। বাইরে তখন সবুজ আর পাহাড় মিলেমিশে একাকার!
যে কাউকে আপন করে নেয় তামাং গাঁও। এই গ্রামে তামাং গোষ্ঠীর মানুষদের বাস, তারাও বেশ আন্তরিক। সারাবছর চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। শুধু ফসলই নয়, সারল্যে ভরা এই রাজ্যে শরতের পর থেকেই রোদটা ঘুরতে শুরু করে। বনের গাছ-গাছালিতে পাতা ঝরা শুরু হয়। বসন্তে রডোডেনড্রন গাছে ফুল আসে। পাহাড়ি মানুষগুলো একইভাবে বয়ে চলেন তুলো-মেঘের মতো। শীত বাড়লে আগুন পোহাতে পোহাতে সেই কোনো আদিম সখ্যের আলপনা আঁকেন তালুতে তালু জুড়ে। দূরে তখন পাহাড়ের গা জুড়ে আলোর জোনাকি মিটমিট করে জ্বলছে।
চাইলে গ্রাম থেকে গাড়িতে ঘুরে আসতে পারেন ধোত্রে, চিত্রে, লামাধুরা, মেঘমা, টংলু। সিরি খোলা, মুংমুংখোলা, হ্যাংগিং ব্রিজ, রিমবিক মোনাস্টারি কিংবা গুম্ববা দাঁড়া ভিউ পয়েন্টও খুব দূরে নয়। এছাড়া, গ্রাম থেকে সামান্য বেরোলে পায়ে হাঁটা অজানা পথের হাতছানি তো আছেই। আর আছে অপার শান্তি, ঘোর বুনে দেয়া হাওয়া এবং হিমালয়। একবার গেলে তামাং গাঁও-এর নেশা আপনাকে ছাড়বে না কিছুতেই।
যেতে চাইলে প্রথমেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামতে হবে। স্টেশনের সামনে থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে আসা যাবে তামাং গাঁও। দার্জিলিং থেকেও শেয়ার গাড়ি পাওয়া যাবে। এই গ্রামে থাকার জায়গা বিশেষ নেই। আছে একটি হোম-স্টে।ডেইলি বাংলাদেশ
আপনার মতামত লিখুন :