রাশিদ রিয়াজ : আন্তর্জাতিকভাবে এধরনের কোম্পানিগুলোর ব্লাক-চেক কোম্পানি হিসেবে এক বিশেষ পরিচিতি আছে। তাদের লক্ষ্য এখন ভারত। নোমুরা হোল্ডিংস ইঙ্ক বলছে ভারতের জালানি শক্তির বিনিয়োগ মূল্য এখন ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যা বিনিয়োগ বা কোনো কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করে বিদেশি বিনিয়োগ পেতে এক অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ভারতে। তা সে জালানি খাত হোক, ই-কমার্স হোক কর্পোরেট অবকাঠামো গড়ে ওঠায় ভারতে বিভিন্ন কোম্পানি নিজেদের একীভূত করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। আগামীতে এভাবে বিদেশি বিনিয়োগ ভারতে আসার আশা করছেন একটি বিনিয়োগ ব্যাংকের শীর্ষ কর্তা উৎপল ওজা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পুঁজি সংগ্রহ করে আর স্থানীয় কোম্পানি অধিগ্রহণ করে তা নতুন ব্যবসা সৃষ্টি করতে বছর দুয়েক সময় লাগে। হংকংয়ের কোটিপতি ব্যবসায়ী রিচার্ড লি এবং এক্স-ক্রেডিট সুইসের প্রধান টিডজানে থিয়াম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর একই পদ্ধতিতে ৬৬ বিলিয়ন ডলারের মূলধন যোগার করতে সমর্থ হয়েছেন। ব্লুমবার্গ
উৎপল ওজা বলেন ভারতের ১০ কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে এধরনের বিনিয়োগ প্রচেষ্টা শুরু করার পর সিঙ্গাপুরের একাধিক কোম্পানি তাদের সঙ্গে যোগ দিতে উৎসাহ দেখিয়েছে। ভারতে পুঁজি বাজার, একীভূত ও অধিগ্রহণ ছাড়াও ফাইনান্সিং খাতেও জাপানের একটি ব্যাংক বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে। তাদের সঙ্গে অন্তত আরো চারটি ব্যাংক যোগ দিচ্ছে এবং এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য খাতভিত্তিক কর্পোরেট বিনিয়োগ করা। ভারতের পুঁজি বাজারে আরো বেশ কিছু কোম্পানি প্রাথমিক শেয়ার বা আইপিও ছাড়তে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে নোমুরা। গত বছর আইপিও ছেড়ে এধরনের কোম্পানিগুলো ভারতের পুঁজি বাজার থেকে ৪.৬ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করে। এখন এসব কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য আইপিও মূল্যের ৫০ শতাংশ বেশি দামে লেনদেন হচ্ছে। গত বছর নোমুরা দ্বিতীয় বৃহত্তম আইপিও যোগানদাতা কোম্পানি হিসেবে কাজ করে। শীর্ষে ছিল কোটাক মাহিন্দ্রা। এবছর ইতোমধ্যে ১.৭ বিলিয়ন ডলারের পুঁজি সংগ্রহের পর স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া মিউচুয়াল ফান্ড জয়েন্ট ভেঞ্চার বাবদ আরো ১ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করেছে। এতে ভারতে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আস্থা ফিরে পাচ্ছে।
এদিকে ভারতের বেকারত্বের হার হ্রাস পেয়ে কোভিড পূর্ব পর্যায়ে চলে গেছে। দি সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনোমি বলছে ভারতে বেকারত্বের হার এখন ৬.৯ শতাংশ। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তা ছিল ৭.৮ শতাংশ। সাপ্তাহিক বিশ্লেষণে সেন্টারটি বলছে ভারতে শ্রমশক্তি কল-কারখানায় ফিরে যেতে শুরু করেছে। যার ফলে বেকারত্বের হার উল্লেযোগ্য হারে কমেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ছিল সাড়ে ৪০ শতাংশ। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৪২.৬ শতাংশ। এর মানে তুলনামূলকভাবে শ্রমশক্তি কার্যকরভাবেই উৎপাদনে অংশ নিতে শুরু করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বেকারত্বের হার হ্রাস পেয়েছে ৩৭.৭ শতাংশ। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৩৯.৪ শতাংশ। বিগত অর্থবছর অর্থাৎ জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪০৫.৩ মিলিয়ন মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে। সে তুলনায় চলতি অর্থবছরে ৩৯৫.২ মিলিয়ন মানুষ কাজের সুযোগ পেয়েছে। তার মানে লকডাউন পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে আড়াই শতাংশ এবং যা ভারতের শ্রমশক্তির ২.৮ শতাংশকে সংকোচনে ফেলে দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :