মঈন উদ্দীন:[২] রাজশাহীতে গত কয়েক মাস ধরেই চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরু থেকে শুরু করে মাঝারি ও মোটা চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি এমন হয়েছে গত ৩ মাসের ব্যবধানে ৭শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শুধু মিল পর্যায়েই। আর এ বাড়তি দরে চাল কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস বাড়ছে।
[৩] সব চাইতে বেশি সমস্যায় পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ওপেন এলসির সুযোগ না থাকার কারণে চালের বাজার অস্থিতিশীল বলে মনে করছেন চাল ব্যবসায়ীরা। ওপেন এলসির সুযোগ না হলে চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী বৈশাখ-জ্যেষ্ঠে নতুন ধান উঠলে নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে চালের দাম।
[৪] রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে পাইকারি এবং খুচরা চালের আড়তগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, চালের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। পাইকারী বাজারে কোন কোন চালের দাম বস্তপ্রতি ২০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তেমনি খুচরা বাজারে কেজিতে ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম।
[৫] আঠাশ চালের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৪ টাকা। তবে পাইকারি বাজারে ৫০ কেজি বস্তার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা। এটির মূল্য আগে ছিলো ২ হাজার ৫০০ টাকা। মিনিকেটের দাম ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৮ টাকা। পাইকারি বাজারে এর দাম ৩ হাজার টাকা। এর অগে দাম ছিলো ২ হাজার ৮০০ টাকা।
[৬] পাইকারি বাজারে জিরাশালের দাম ৩০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮০০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ২ টাকা বেড়ে দাম হয়েছে ৫৮ টাকা। বাসমতি চালের দাম বস্তপ্রতি ৬০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। এতে খুচরা বাজরেও দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩ টাকা করে। বাসমতি এখন ৬৫ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
[৭] বাড়তি দাম নাজিরশাল আর স্বর্ণারও। নাজিরশালের দাম ২ হাজার ৬০০ টাকা থাকলেও এখন
৪০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। স্বর্ণা দাম ২০০ টাকা করে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা। খুচরা বাজারে নাজিরশালের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে দাম হয়েছে ৬৫ টাকা।
[৮] বাড়তি এই চালের দাম নিয়ে মেসার্স মক্কা রাইস এজেন্সির মালিক আব্দুল কাদের বলেন, আমি জানি সারাদেশে মাত্র ৩২০ জন আমদানিকারককে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই বড় বড় ব্যবসায়ী। সাধারণ ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এখন যারা ভারত থেকে চাল আনছেন তারা নিজেরাই মজুদ করছে। তাদের এই সিন্ডিকেটের জন্য ভারত থেকে চাল আমদানি করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
[৯] তিনি আরও বলেন, ওপেন এলসির সুযোগ সরকার না দিলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে এত সহজে আসবে না। এখন প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে চালের দাম বাড়তে পারে। তবে নতুন চাল কয়েক মাস পরে বাজারে আসলে দাম কমতে পারে।
[১০] রাজশাহী পাইকারী চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, আমরা এলসি খোলার সুযোগ পাইনি। হাতে গোনা কিছু লোক এলসি খোলার সুযোগ পেয়েছেন। যারা পেয়েছেন তারা চাল কিনে কখন কি করছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। ওপেন এলসির সুযোগ নেই বলেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান