মাসুদ রানা: প্রয়াত অধ্যাপক ও পণ্ডিত হুমায়ূন আহমেদ বুঝতে পেরেছিলেন, বিজ্ঞানে নন, শিক্ষকতায় নন, তিনি অধিক সৃষ্টিশীল হচ্ছেন সাহিত্যে। তিনি সৎ ও আন্তরিক ছিলেন বলে বিজ্ঞান-শিক্ষকতা ত্যাগ করে পূর্ণ-কালীন সাহিত্যিক হয়ে গিয়েছিলেন এবং অসামান্য সৃষ্টিশীল অবদান রেখে গিয়েছেন তার নবনির্বাচিত বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে। কিন্তু সবাই হুমায়ূন আহমেদের মতো সৎ, আন্তরিক ও সাবলীল হন না। পরীক্ষায় ভালো ফল-করা উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে অনেকেই পিএইচডি করার পর নিজেদের সৃষ্টিশীলতার অভাব বুঝতে পারেন।
তখন গবেষক হিসেবে নিজের সাবজেক্টে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন। সৃষ্টিশীলতাহীন হীনমন্য পণ্ডিতগণ নিজের অন্তঃসারশূন্যতা ঢাকতে নিজের সাবজেক্টের বাইরে গিয়ে কিছু বেপরোয়া মন্তব্য করে একটি হৈ- চৈ তৈরির মাধ্যমে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে একটি তৃপ্তিদায়ক আত্মমূল্য প্রতিষ্ঠা করতে চান।
তাদের সবার একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা নিন্দুক কিন্তু স্রষ্টা নন। তাদের পক্ষে মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টি করা সম্ভব হয় না। সাধারণতঃ তারা অল্পশিক্ষিতদের মধ্যে জনপ্রিয়। কারণ, অল্পশিক্ষিত পাঠক-শ্রোতারা ক্রিটিক্যাল নন বলে ওই ব্যর্থ ও হীনমন্য পণ্ডিতদের প্রশ্ন করতে পারেন না। উদাহরণ স্বরূপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি শিকারে ব্যর্থ ও হীনমন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে এটি বলাই স্বাভাবিক যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সব মূর্খ। এ-প্রকারের ব্যক্তির পক্ষে এমনও বলা সম্ভব যে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ পাঠশালার শিক্ষদের চেয়েও কম জানেন।
এটি বলতে তার কোনো গবেষণা কিংবা যুক্তির প্রয়োজন নেই; বরং তার ব্যর্থতাজাত হীনমন্যতা, গোস্বা ও হিংসাই যথেষ্ট। বলাই বাহুল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষদের চেয়ে সংখ্যায় বহুগুণ বেশি পাঠশালা-শিক্ষক এবং পাঠাশালা-পর্যন্ত শিক্ষিত লোকদের অধিকাংশের কাছে ওই দাবীর দাবীদার ও জনপ্রিয়তার কাঙ্গাল ব্যক্তিটি বিপুল জনপ্রিয়তা পাবেন। এহেন কাঙ্গালদের বলা হয়, পপুলিস্ট বুদ্ধিজীবী, যারা জনগণের বুদ্ধিনাশের শক্তিশালী এইজেণ্ট। লণ্ডন, ইংল্যান্ড। ফেসবুক থেকে