ডেস্ক রিপোর্ট: শ্রমিকদের বিদেশ যেতে সরকার যে খরচ ঠিক করে দিয়েছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাঁচ গুণ বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যয়ের ওপর এক জরিপে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। ইত্তেফাক
জরিপে দেখা যায়, মালয়েশিয়ায় সরকার নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে ২১৮ শতাংশ বেশি ব্যয় হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকের দেশ সৌদি আরবে বাড়তি ব্যয় হয়েছে ২৮৭ শতাংশ। এছাড়া ২০১৮ থেকে গত বছরের মার্চ পর্যন্ত হিসাবে কুয়েতে যেতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের, যা ৫৩০ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার এক অনলাইন সেমিনারে জরিপ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
জরিপ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যয় কমতির দিকে হলেও তা এখনো সরকার নির্ধারিত ব্যয়ের তুলনায় অনেক বেশি। ২০১৪-১৫ সালে যেখানে একজন নারী শ্রমিকের বিদেশ যেতে গড়ে ব্যয় হতো ৫৩ হাজার ৮৫ টাকা, ২০১৮ থেকে গত বছরের মার্চ পর্যন্ত তা নেমে এসেছে ২৮ হাজার ৫৮২ টাকায়। অবশ্য এই সময়ে একজন পুরুষ শ্রমিককে বিদেশ যেতে গড়ে ব্যয় করতে হয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ১১৩ টাকা। সেই হিসেবে একজন নারী শ্রমিকের চেয়ে পুরুষ শ্রমিকের ব্যয় ১৭ গুণ বেশি। বর্তমানে অভিবাসী শ্রমিকের মধ্যে ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
অভিবাসী শ্রমিকের ওপর দৃষ্টি রিসার্চ সেন্টার এই জরিপটি করেছে। ২০১৯ সাল থেকে গত বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি জেলার ১২৫টি গ্রামে জরিপটি চালানো হয়। জরিপ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন দৃষ্টি রিসার্চ সেন্টারের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর মাদাম তেরেসা ব্লঁশে। অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) ও দৃষ্টি রিসার্চ সেন্টার (ডিআরসি) যৌথভাবে ঐ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা দেশের অর্থনীতির স্বার্থে অভিবাসী কর্মীদের যাওয়া সহজ, নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং অভিবাসন ব্যয় কমাতে কার্যকর ও টেকসই উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব বিদেশে নারী অভিবাসী শ্রমিকের হার বাড়াতে এবং তাদের সচেতন করতে ইতিবাচক বিষয়গুলো প্রচারণার ওপর গুরুত্ব দেন। র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, দেশের অর্থনীতির সঙ্গে কর্মসংস্থান সে হারে বাড়েনি। এখন দক্ষ শ্রমিক বিদেশে পাঠানোর দিকে নজর দিতে হবে।
ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভির সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও এ খাত সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির, র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ, আইএলওর প্রতিনিধি ইগোর বস প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :