অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন: অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী আজ সুবিধাবাদিতায় মুখ গুঁজেছেন! তারাই এখন প্রধান, তারাই আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও বিজ্ঞাপিত। অন্যরা কমবেশি ভীত। তা ছাড়া এগিয়ে আসার জন্য যে প্রকাশমাধ্যম প্রয়োজন, তা-ও নেই। গণমাধ্যম বলতে যা বোঝায়, তা বিদ্যমান ব্যবস্থার সংরক্ষণে ব্যস্ত, ভিন্নমতকে তারা প্রকাশের সুযোগ দেয় না, কেউ কেউ পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এইরকম একটি সাংঘাতিক সত্য কথা বলার মানুষ আমাদের দেশে এখন বিলুপ্তপ্রায়।
এমনকি সার্কাস্টিক আকারে বা কার্টুন এঁকেও এইরকম সত্য কথা বলা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পরেছে। যা সরকারের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন কথা বললেই কোনো একটি দলের ট্যাগ লাগিয়ে দিয়ে সমাজে তাকে হেয় করার ফসল ক্ষমতাসীন দল খুব সফলভাবেই ঘরে তুলেছে।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আজ এই বয়সে এসেও দেশ ও সমাজ নিয়ে ভাবেন। অথচ উনার বয়সের ৯৯.৯৯ শতাংশ মানুষ এই দেশে কিভাবে দিন যাপন করে? এই মানুষটির কিছু পাওয়ার নেই তবুও সত্য কথাগুলো বলে যাচ্ছেন। অথচ বলার কথা এখন আমাদের। আমরা সবাই এখন সুবিধাবাদিতায় বুদ হয়ে আছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন ‘জ্ঞানের চর্চা কমছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও জ্ঞানের সৃজনশীল চর্চা আশাপ্রদ নয়।
দোষটা যে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের তা কিন্তু নয়। জ্ঞানের কদর সমাজে কমেছে। জ্ঞানে কাজ হয় না, কাজ হয় টাকায়। জ্ঞানী লোকদের সম্মান নেই, টাকাওয়ালাদের আছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়কে তো পথপ্রদর্শন করতে হবে। জ্ঞানচর্চা কিন্তু একাকী করা যায় না, সমবেত উদ্যোগের দরকার পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই উদ্যোগে কেবল শিক্ষকদের নয়, ছাত্রদেরও যুক্ত করা চাই। তার জন্য চাই সাংস্কৃতিক জীবন।’ লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়