শিরোনাম
◈ আমেরিকায় বাংলাদেশি হাবিব নুরের সফলতার গল্প: বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম পরিচালনা ◈ মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে যা বললেন র‌্যাব (ভিডিও) ◈ বেনাপোল বন্দরে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক ◈ ভারত- ইংল‌্যান্ড টেস্ট সি‌রি‌জে বাংলা‌দে‌শের  সৈকতের আম্পায়ারিং বিতর্ক ◈ প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, অ্যাসিড নিক্ষেপে শিশুসহ দগ্ধ ৩ ◈ বাংলাসহ বিশ্বের ৩৫ ভাষায় শোনা যাবে মক্কার জুমার খুতবা ◈ শাজাহানপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ কনষ্টেবলকে গণধোলাই  ◈ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন হুমকির মুখে: শিল্প, বিষ, পর্যটন ও জলবায়ুর প্রভাবে বিপন্ন জীববৈচিত্র্য ◈ উচ্ছেদের ৪৫ দিনের মাথায় ফের গজিয়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা: বাগেরহাটে সড়কপথে আবারও বিশৃঙ্খলা ◈ যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লাইটে ধস্তাধস্তির ভিডিও ভাইরাল, ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:০৮ দুপুর
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:০৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অমি রহমান পিয়াল: জিয়া নিজেও তার শাসনামলে ইচ্ছামতো কিছু খেতাব বাতিল আর কয়েকজনকে খেতাব দিয়েছেন

অমি রহমান পিয়াল : গ্যালান্টারি এওয়ার্ড একান্তই সেনাবাহিনীর এখতিয়ার। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ওসমানী এই ওল্ডস্কুল ধারণার একজন তেড়িয়া সমর্থক ছিলেন। দুর্দান্ত সাহসী জগৎজ্যোতি দাস যখন লড়তে লড়তে মরলেন, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র তাকে বীরশ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা দিলো। ওসমানী উপেক্ষা করলেন। তার কথা জগৎজ্যোতি সেনাবাহিনীর কেউ না। বিজয়ের পরও ওসমানী তার সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। তার কথা বেসামরিক যোদ্ধারা সবাই সেনাপতির বিশেষ সাইটেশন পাবেন। কিন্তু খেতাব শুধু সেনাবাহিনীর অফিসার এবং সদস্যদের জন্য। তালিকায় প্রতিরোধের প্রথম লড়িয়ে পুলিশ এমনকি বিজিবিকেও ‘তখন ইপিআর থেকে বিডিআর’  রাখা যাবে না। সেক্টর কমান্ডাররা মনোনয়ন পাঠাবেন, সেনাপতি এপ্রুভ করবেন।

১৯৭২ সালের এপ্রিল নাগাদ বাংলাদেশ সরকার এক গেজেটে ৪৩ জনকে নির্বাচিত করলেন বীরত্বপূর্ণ খেতাবের জন্য। গণবাহিনীরও কয়েকজন স্বীকৃতি পেলেন। ৬ এপ্রিলের সেই বাংলাদেশ গেজেটে মাত্র একজন বীর শ্রেষ্ঠ ছিলেন- শহীদ মুন্সী আবদুর রউফ। বীর উত্তম ছিলেন তিনজন শহীদ ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মুমতাজ, শহীদ ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান এবং চার নম্বর সেক্টরের সংগঠক ও গণবাহিনী কমান্ডার খাজা নিজামউদ্দিন। এর বাইরে ১৪ জন বীর বিক্রম ও ২৫ জন বীর প্রতীক। এ তালিকা নিয়ে আপত্তি উঠলো দুই তরফেই। বেসামরিক যোদ্ধারা এই বৈষম্যে ক্ষুব্ধ হলেন।

দুই বছর অনেক টানাহ্যাচরা যোগ বিয়োগ শেষে ২৬ জানুয়ারি ১৯৭৪ মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য ৬৭৬ জনের নাম ঘোষণা করা হলো। এতে সামরিক, আধাসামরিক, বেসামরিক সবাই সুযোগ পেলেন। এবং ওসমানী তার পছন্দ অপছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে তালিকাটি ঠিকই বিতর্কিত করে রাখলেন। আগের ৪৩ জনের সঙ্গে ৬৩৩ জন যুক্ত করে ঘোষিত তালিকায় বীরশ্রেষ্ঠ (মরণোত্তর) ৭জন, বীর উত্তম  ৬৮ জন, বীর বিক্রম ১৭৫ জন এবং ৪২৬ জনকে বীর প্রতীক খেতাব দেওয়া হলো।

সেক্টর কমান্ডারদের সবাইকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হলেও বাদ পড়লেন যুদ্ধের শুরুতে উত্তরবঙ্গ কাপানো মেজর নাজমুল হক, দক্ষিণ কাপানো আবু ওসমান চৌধুরী কিংবা মেজর জলিলের নাম। একটিও গুলি না ছুঁড়ে ওসমানীর ফাইল বয়ে বেড়ানো ক্যাপ্টেন নূরও (বঙ্গবন্ধুর খুনিদের একজন) বীর প্রতীক উপাধী পেলেন। বঞ্চিত রয়ে গেলেন অগণিত সত্যিকার যোদ্ধা। যাহোক, এতো কথা বললাম আসলে জিয়ার খেতাব বাতিল প্রসঙ্গে। জিয়ার একাত্তরে যে যুদ্ধ ইতিহাস, তাতে খেতাবটা নেহাতই ওসমানীর খাতিরের লোক হিসেবে পাওয়া। এই জিনিস পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনার মতো, বাতিল হলেও সমস্যা নেই। জিয়া নিজেও তার শাসনামলে ইচ্ছামতো কিছু খেতাব বাতিল আর ইচ্ছামতো কয়েকজনকে খেতাব দিয়েছেন। তাদের একজন মধুকে নিয়ে রীতিমতো ফেসবুক যুদ্ধ করেছিলাম কিছু সুশীলের সঙ্গে। মধুর ডায়েরি নিয়ে বিতর্কিত এক উপন্যাস লিখে প্রথম আলো পুরস্কারও পেয়েছেন একজন যার মিথ্যা ডায়েরির প্রতিটা নাম কাল্পনিক, মনগড়া।

খেতাব বা যেকোনো সম্মাননাই পরবর্তী অপকর্ম কিংবা সত্য ইতিহাস বেরিয়ে আসার সুবাদে বাতিল হতে পারে। অং সান সুচির এ অভিজ্ঞতা হয়েছে। ভিন দেশের গুপ্তচর বলে প্রমাণিত হওয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন খেতাব হারিয়েছেন প্রচুর মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনা অফিসার। তো জিয়ার খেতাব বাতিল বা কেড়ে নিলেই কোনো ইতরবিশেষ হবে বলে মনে হয় না। হাইকোর্ট বলেছে সকল মুক্তিযোদ্ধাই বীর, তাদের নামের আগে বীর সম্বোধন করতে হবে। তাই ডিসিক্রিমিনেশনের জায়গাটা  নেই। বরং মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল হলে সেটা একটা কথা। এখন যা হচ্ছে সেটার মেরিট যাই থাকুক, দিন শেষে তা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবেই আমলে নেবে বেশীরভাগ মানুষ। ভবিষ্যতে দেখা যাবে জিয়ার দল ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর জাতির পিতা স্বীকৃতি বাতিল করে দেবে ঘৃণ্য প্রতিশোধপরানয়তায়।

বাস্তবতা হচ্ছে জিয়া যা ছিলেন তাই থাকবেন। কারও কাছে ঘোষক, কারও কাছে বিশ্বাসঘাতক। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো সিদ্ধান্ত দিবো না। বরং মুক্তিযুদ্ধের খেতাব যে সঠিক বণ্টন হয়নি আমার যুক্তি প্রমাণ সেটাতেই স্থির রাখলাম। আমার সাধ্য থাকলে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে মাত্র ৫টি গুলি নিয়ে থ্রি নট থ্রি দিয়ে লড়তে লড়তে মরে যাওয়া রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সবাইকে বীর শ্রেষ্ঠ খেতাব দিতাম। যদিও ওসমানী কিংবা সরকার তাদের একজনকেও যোগ্য মনে করেনি। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়