সালেহ্ বিপ্লব: [২] কোভিড মহামারীতে মানসিক সমস্যার পাশাপাশি মাদকাসক্তি এবং বন্দুক সন্ত্রাসের পরিমাণ আশংকাজনক বেড়ে গেছে। তরুণরা নানা ধরনের গ্যাং-এ জড়িয়ে সহিংসতায় লিপ্ত হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে নির্ঝঞ্ঝাট মানুষও সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। কানাডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর টরন্টোর এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে ‘শওগাত আলী সাগর লাইভের’ আলোচনায়।
[৩] কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় সম্প্রচারিত ‘টরন্টোয় কেন এতো বন্দুক যুদ্ধ’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শিশির শাহনওয়াজ, বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী সাজ্জাদ আলী এবং ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মুনতাকা আহমেদ।
[৪] অর্থনীতিবিদ ড. শিশির শাহন্ওয়াজ বলেন, অর্থনৈতিক বৈষম্য, নানা রকমের সুযোগ সুবিধায় অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসবাদের উসকানি দেয়। টরন্টোয় অর্থনৈতিকভাবে চাপে থাকা কমিউনিটি এবং তাদের আবাস এলাকাগুলোতেই সন্ত্রাসী তৎপরতা বেশি হচ্ছে।
[৫] বন্দুকের সহজলভ্যতাকে টরন্টোয় সন্ত্রাসের অন্যতম একটি কারন হিসেবে উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ড. শিশির বলেন, প্রতিবেশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধপথে নানা ধরনের বন্দুক কানাডায় চলে আসে। এই সহজলভ্যতা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বন্দুক সন্ত্রাস বন্দ করা কঠিন হবে।
[৬] তিনি সন্ত্রাস বন্ধে ফেডারেল, প্রভিন্সিয়াল এবং মিউনিসিপ্যালিটি সরকারের যৌথ পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে বলেন, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যসহ কর্মসংস্থান এবং সামগ্রিকভাবে বন্দুক সন্ত্রাস বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
[৭] বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী সাজ্জাদ আলী বিগত কয়েক বছরের সহিংসতার তথ্যউপাত্ত তুলে ধরে বলেন, টরন্টো এখন রীতিমতো একটি আতংকের শহরে পরিণত হয়েছে। কারো সাতে পাঁচে নাই- এমন সাধারন মানুষেরা পর্যন্ত সহিংসতার শিকার হচ্ছেন।
[৮] তিনি শহরের রিজেন্ট পার্কে গত সপ্তাহে তিনজন বাংলাদেশি কানাডীয়ানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা সারাদিন কাজ করে নিজের বাসার পার্কিং লটে গল্প করার সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলির শিকার হয়েছেন।
[৯] তিনি সন্ত্রাস দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ধর্মীয় এবং শ্বোতঙ্গ উগ্রপন্থীরা যাতে সশস্ত্র সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিক কড়া নজর দিতে হবে।
[১০] ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মুনতাকা আহমেদ বলেন, মানসিক অসুস্থতা, গ্যাং, সন্ত্রাস এসব নিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির অভিভাবকরা কথা বলতে চান না। তারা মনে করেন- এগুলো অন্য কমিউনিটির বিষয়, আমাদের কমিউনিটিতে আসবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- এগুলো কমিউনিটি বা গোত্র বর্ণ দেখে আসে না।
[১১] সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে মুনতেকা আহমেদ বলেন, নিজের ঘরে, নিজের কমিউনিটিতে নির্ভরযোগ্য বন্ধু খুঁজে না পেলে একজন তরুণ তরুণী বাইরে বন্ধু খুঁজতে বেরোয়। এই সময়টায় তারা খারাপ সঙ্গে জড়িয়ে পরে।
আপনার মতামত লিখুন :