লিহান লিমা: [২] নেদারল্যান্ডের তদন্ত কমিটি ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলংকা থেকে দত্তক নেয়া শিশুদের তথ্য বিশ্লেষণ করে। তদন্তে উঠে আসে, এ সময়ের মধ্যে দত্তক নেয়া অনেক শিশুকে চুরি করে আনা হয়েছে বা চরম দারিদ্র্যের সম্মুখীন বাবা-মাকে টাকার লোভ দেখিয়ে সন্তানকে নেয়া হয়েছে। বিবিসি/ডয়েচে ভেলে
[৩]দুই বছরের তদন্তের পর কমিটির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এই শিশুদের দত্তক নেয়া ভয়ঙ্করভাবে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। এরমধ্যে অপহরণ, শিশু পাচার, দলিলপত্র জালিয়াতি ও চুরি, এবং মিথ্যা কারণ দেখিয়ে দত্তক নেবার মত ঘটনাও রয়েছে। এসব অবৈধ দত্তকগ্রহণের কিছু ঘটনায় বিভিন্ন দেশে নেদারল্যান্ডসের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের গাফিলতি পাওয়া গিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে কোন ঘুষ গ্রহণ বা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
[৪]বিদেশ থেকে শিশু দত্তক নেয়া স্থগিতের সরকারী সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়ে নেদার্যান্ডের আইনী সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী স্যান্ডার ডেকার জানান, ‘ডাচ সরকার বহু বছর ধরে দত্তক গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সন্দেহজনক অনিয়ম বা অনাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এজন্য দত্তক নেয়া শিশুদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানি দত্তক স্থগিতের বিষয়টি অনেক সন্তানপ্রত্যাশী বাবা-মায়ের জন্য কষ্টের কিন্তু আমরা শিশু ও তার জৈবিক পিতা-মাতার সুরক্ষার্থে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
[৫]ইন্দোনেশিয়ায় নিজের জৈবিক বাবা-মাকে খুঁজতে যাওয়া বিদিয়া অস্তুতি বোয়ের্মা (৪৫) সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমান দত্তকগ্রহণ পদ্ধতিটি আর্থিক প্রণোদনাভিত্তিক হওয়ায় এটি শিশু পাচারকে উদ্বুদ্ধ করে।’
[৬]গত ৫০ বছরে বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশ থেকে ৪০ হাজার শিশুকে নেদারল্যান্ডে দত্তক নেয়া হয়েছে।