মারুফ রসূল : ইতিহাস থেকেই শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি এনায়েতুল্লাহ খান সম্পাদিত হলিডে পত্রিকার প্রথম পাতাতে বক্স আইটেম হিসেবে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের বিষয়বস্তু-সুইস ব্যাংকের গোপন একাউন্টে শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবারবর্গের বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে। সংবাদ-সূত্র হিশেবে উল্লেখ করা হয়েছিলো মার্কিন সাপ্তাহিক নিউজউইক।
এ বিষয়ে গণভবনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনাকালে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামের প্রস্তাব অনুযায়ী এ সম্পর্কে তদন্তের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা ছিলেন তৎকালীন তথ্য দপ্তরের পরিচালক জনাব জহুরুল হক, প্রধানমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা তোয়াব খান এবং সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী। সাতদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি পূর্ববর্তী তিন মাসে প্রকাশিত নিউজউইক, টাইম, দ্য ইকোনোমিস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস এবং আরও কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো বিশ্লেষণ করে। সুইস ব্যাংক বা এই ব্যাংকের কোনো একাউন্ট সম্পর্কিত কোনো সংবাদই তাঁরা খুঁজে পাননি। ফলে তদন্ত কমিটি হলিডে সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। অবস্থা বেগতিক দেখে গুজব সৃষ্টিকারী এই সম্পাদক আলোকচিত্রী আলহাজ্ব জহিরুল হকের মাধ্যমে শেখ ফজলুল হক মণির শরণাপন্ন হয়। ক্ষমা চেয়ে স্বীকার করে যে, গুজব সৃষ্টির জন্যই এমন সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক নিউজ চ্যানেল আল জাজিরার পরিবেশিত বাংলাদেশবিরোধী নানা মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদের বিষয়েও সরকারের তদন্ত করা জরুরি। সরকার ইতোমধ্যেই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে। তবে তদন্তটি করা প্রয়োজন ভবিষ্যতের জন্য। যেনো এর নথিপত্র থেকে পরবর্তী প্রজন্ম মূল সত্যটা স্মরণে রাখতে পারে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, ১৯৭৪ সালে যদি বঙ্গবন্ধু ওই মিথ্যা তথ্যভিত্তিক সংবাদের ক্ষেত্রে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করতেন, তাহলে আজকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ঘিরে বানানো হাজারো মিথ্যের মধ্যে সুইস ব্যাংকও জায়গা করে নিতো। অতএব পাল্টা অনুসন্ধানটি জরুরি। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :