শিরোনাম
◈ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আপত্তি মোদি সরকারের! ◈ উনি ক্লাসে বাজে ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন ◈ এবার নিউ ইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি ট্রাম্পের!, তীব্র প্রতিক্রিয়া ◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল ◈ প্রথম ওয়ান‌ডে ম‌্যা‌চে মুশফিক-রিয়াদের জায়গায় খেলবেন লিটন দাস ও মিরাজ ◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৯:১০ সকাল
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৯:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্যাংকিং সফটওয়্যারের আড়ালে অর্থ পাচার

ডেস্ক রিপোর্ট : ব্যাংক নিজেই মানি লন্ডারিংয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে—এমন অভিযোগ নতুন নয়। তবে এবার খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে ঐ প্রতিবেদনে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকে সরেজমিন তদন্ত করে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারের বিভিন্ন দুর্বল দিক চিহ্নিত করে। একই সঙ্গে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারের আড়ালে মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়। আর এতে অগ্রণী ব্যাংকের দায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। শুধু মুদ্রা পাচারই নয়, অগ্রণী ব্যাংককে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে রাখার বিষয়টিও তদন্তে স্পষ্ট হয়েছে।

সূত্র মতে, অগ্রণী ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার জালিয়াতি (টি-২৪ সফটওয়্যার) নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় একজন আমানতকারী উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ অগ্রণী ব্যাংকে ব্যবহৃত কোর ব্যাংকিং সলিউশন নিয়ে বিশেষ তদন্ত ও অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। উল্লেখ্য যে, অগ্রণী ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার (সিবিএস) আপগ্রেডেশন না হওয়ায় ব্যাংকটি ঝুঁকির মুখে পড়ে যায়। অগ্রণী ব্যাংকের একজন উপ-মহাব্যবস্থাপকের স্বাক্ষর জালসহ সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনে নানা জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়। একপর্যায়ে মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টিও সামনে চলে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, অগ্রণী ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোর ব্যাংকিং সলিউশনের ১ হাজার ১৩৭টি কন্ট্রোল পয়েন্টের মাত্র ৫৩৪টি বাস্তবায়ন করেছে। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব শাখায় সিবিএস বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সঠিক তথ্য সরবরাহ করেনি। বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে ব্যাংক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টেমিনসের স্থানীয় প্রতিনিধি ফ্লোরা টেলিকমের গাফিলতির প্রমাণও পাওয়া গেছে। পারস্পরিক যোগসাজশে ব্যাংক থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেডের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী টি-২৪ সফটওয়্যারের মেয়াদ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়। পরে নতুন চুক্তি করলে তার আর্থিক ব্যয় বহু গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু টি-২৪ সফটওয়্যারটির সংশ্লিষ্ট ভার্সনের সাপোর্ট সার্ভিস ৩১ মার্চ ২১ সালে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে অগ্রণী ব্যাংককে জানিয়ে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টেমিনস।

তার পরও তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি ফ্লোরা টেলিকমকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে লাইসেন্স ফি বাবদ ৮৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং ২২ মে ২০১৯ তারিখে প্রথম ষান্মাসিকের রক্ষণাবেক্ষণ ফি বাবদ ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। যেখানে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিবিএস বাস্তবায়ন করা না হলে ব্যাংক কর্তৃক ‘লিকুইটেড ড্যামেজ’ আদায় করার কথা বলা হয়েছে, সেখানে ফ্লোরা টেলিকম বারবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সফটওয়্যার বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

উপরন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিজনেস ইস্যু সফটওয়্যারে ফ্লোরা টেলিকম থেকে কাঙ্ক্ষিত মানের সেবা পেতে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও পুনরায় আপগ্রেডেশনের জন্য ঐ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার বিষয়টিও গ্রহণযোগ্য নয়।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, ফ্লোরা টেলিকম কেবলমাত্র অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করার মতো অপরাধেই অভিযুক্ত নয়, মানি লন্ডারিংয়ের মতো গুরুতর অপরাধেও জড়িত। এই মানি লন্ডারিংয়ের দায় অগ্রণী ব্যাংকও এড়াতে পারে না। এ বিষয়ে সুষুম তদন্তের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে (বিএফআইইউ) ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

তদন্তকালে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ শাখা পর্যায়েও অননুমোদিত ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক কানেকশনের ব্যবহার পাওয়া গেছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যাংকের নিজস্ব নীতিকে সমর্থন করে না। তদন্ত প্রতিবেদনে সিবিএস গাইডলাইন বাস্তবায়নে তদারকি নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কমিটি গঠন ও আপগ্রেডেশনের যথাযথ বাস্তবায়ন তৃতীয় পক্ষ দ্বারা যাচাই করার প্রস্তাব করা হয়। সূত্র: ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়