ডেস্ক রিপোর্ট: পড়াশোনার খরচ জোগাতে ভাড়ায় অটোভ্যান চালাত ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সিয়াম। সাধের সেই অটোভ্যানটিই তার জন্য কাল হলো। এই অটোভ্যান ছিনতাই করতেই দুই কিশোর মিলে হত্যা করে সিয়ামকে। ঘটনার চার দিন পর বুধবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। তাদের দেওয়া তথ্যে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ভ্যানের ক্রেতা গ্যারেজ মালিক রতন কুমার সাহাকে। বৃহস্পতিবার তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ফুলপুর উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের মারাদেওরা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সিয়াম। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। নিজের পড়ালেখার খরচ চালাতে ভাড়ায় অটোভ্যান চালাত সে। গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে অটোভ্যান নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ও এলাকায় মাইকিং করে। পরদিন ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের তারাকান্দা উপজেলার কাকনী এলাকার একটি সেতুর নিচে লাশ পাওয়া যায় তার। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মকবুল হোসেন বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গত বুধবার আটক করে ১৬ ও ১৭ বছরের দুই কিশোরকে। তাদের বাড়ি ফুলপুর উপজেলার বড় শুনই চকহরিরামপুর গ্রামে। দু'জনই মাটি পরিহবনের গাড়িতে শ্রমিকের কাজ করে। দুই কিশোর মিলে গত ২৯ জানুয়ারি সিয়ামের অটোভ্যানটি ভাড়া করে ২০০ টাকায়। ফুলপুর থেকে নিয়ে যায় তারাকান্দায়। সারাদিন তারাকান্দা এলাকায় ঘোরাফেরার পর সন্ধ্যায় ফুলপুরের কাকনী ব্রিজের কাছে যেতেই পরিকল্পনা মতো রাস্তার পাশে ফেলে শ্বাসরোধে হত্যা করে সিয়ামকে। এর পর দুই কিশোর ভ্যানটি নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে চলে যায়। সেখানে পাটগুদাম র্যালির মোড়ের রতন কুমার সাহার গ্যারেজে পাঁচ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি করা হয় ভ্যানটি। এর পর টাকা নিয়ে ঢাকায় চলে যায় তারা।
ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ জানান, বৃহস্পতিবার ভ্যানের ক্রেতা রতন কুমার সাহাসহ দুই কিশোরকে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাবনবন্দি দেন। ৬ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক দেওয়ান মনিরুজ্জামান তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।সূত্র: প্রথম আলো
আপনার মতামত লিখুন :