শিরোনাম
◈ রিজার্ভে বড় সাফল্য: আইএমএফের লক্ষ্য ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ, প্রবাসী আয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি! ◈ আদানির বকেয়ার সব টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ◈ মাঠে ছড়িয়ে থাকা লেবু ও  ডিম দে‌খে ম্যাচ খেলতে আসা ‌ক্রিকেটাররা ভয়ে পালালেন ◈ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আপত্তি মোদি সরকারের! ◈ উনি ক্লাসে বাজে ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন ◈ এবার নিউ ইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি ট্রাম্পের!, তীব্র প্রতিক্রিয়া ◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল ◈ প্রথম ওয়ান‌ডে ম‌্যা‌চে মুশফিক-রিয়াদের জায়গায় খেলবেন লিটন দাস ও মিরাজ

প্রকাশিত : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৬:৩৮ সকাল
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৬:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রেক্টিফায়েড স্পিরিটের বড় অংশ বিক্রি মাদকের বাজারে

ডেস্ক রিপোর্ট : বগুড়ায় মদপানে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর ঘটনায় পর্দার আড়ালের রথী-মহারথীদের খোঁজখবর শুরু হয়েছে। দেশী ও বিদেশী তরল মদপানের বিষয়টি নতুন নয়। মদ্যপানের অনুমতিপত্র দেয়া হয়। এদের পানপর্ব শুরু হয় সন্ধ্যায়। শেষ হয় গভীর রাতে। অতিরিক্ত মদ্যপায়ীদের অনেকে বিষক্রিয়ায় মারা যায়। বগুড়ায় শুরু হওয়া মৃত্যুর ঘটনা বর্তমানে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।

গত রবিবার বগুড়া শহরতলির দক্ষিণপাড়ায় এক ঋষি পরিবারের ছেলের বিয়েতে আনন্দের জন্য মদপানের আয়োজন হয়। ঢুকুঢুকুতে অনেকেই অংশ নেয়। আনন্দ নিরানন্দ করে দেয় বিষাক্ত মদ। রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খোঁজখবর করে মিলেছে ১৮ জনের মৃত্যুর খবর। কয়েকটি সূত্রের খবর এই সংখ্যা ২৪। পুলিশ এখনও মদপানে মৃত্যুর তালিকায় আটটিতেই আছে। তবে তারা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের হোমিও দোকানগুলোতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বৃহস্পতিবার একটি হোমিও ল্যাবরেটরিতে অভিযান চালিয়ে এক হাজার পাঁচ শ’ লিটার ইথানলসহ মদ তৈরির উপকরণ মিলেছে। এর আগে বুধবার বগুড়া পুলিশ মদপানে মৃত্যুর মামলায় অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করে।

হোমিও প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈধতার সাইনবোর্ডে আসা রেক্টিফায়েড স্পিরিটের (আরএস) বড় অংশ বিক্রি হচ্ছে সস্তা মাদকের বাজারে। আর এস’র সঙ্গে পানি মিশিয়ে নেশার মাদকতার ঝাঁজালো করতে মেশানো হয় কাঠের আসবাবপত্র বার্নিশের ‘মিথানল’। অধিক মিথানলের দ্রবণ বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। মদের কারবারিরা অধিক মুনাফার লোভে আরএসের মিশ্রণে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থকে দ্রবীভূত করে তোলে। অধিক মুনাফার এই ব্যবসায় যোগ দিয়েছে এক শ্রেণীর হোমিও প্রতিষ্ঠান। যারা হোমিও ওষুধ তৈরির ল্যাবরেটরি স্থাপন করে আরএস কেনার লাইসেন্স নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, বগুড়া ও ঢাকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গত জুন মাসে পাঁচ শ’ ব্যারেল আরএস আমদানি করেছে। এই আরএস দিয়ে হোমিও ওষুধের পাশপাশি বোতলজাত করা হচ্ছে দেশী মদ।

সূত্র জানায়, বগুড়ার মাদক কারবারিরা মদ পাঠায় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। কখনও ঢাকা থেকেও মদ আসে নক্সা করা মোড়কে। বগুড়ায় অন্তত কয়েক শ’ কোটি টাকার মদের অবৈধ বাণিজ্য আছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অফিস জানায়, বগুড়া সার্কেলের আওতায় সাতজন হোমিও চিকিৎসক, দুটি সরকারী প্রতিষ্ঠান, একটি হোমিও ল্যাবকে আরএস ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতিবছর সরকারী প্রতিষ্ঠান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য ১০০ লিটার, সরকারী এসেন্সিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) আট হাজার ৫০০ লিটার, পারুল হোমিও ল্যাবরেটেরির জন্য ৪০০ লিটার। বেনীপুর হোমিও ১১ লিটার, করতোয়া হোমিও ২৯ লিটার, মুন হোমিও ৫০ লিটার, ফ্রেন্ডস হোমিও ৭৫ লিটার, নিরাময় হোমিও ১৮ লিটার, পপুলার হোমিও ১৮ লিটার। মাটিডালি বাজারের ফেরদৌস আলমের ১০ লিটার। বগুড়া জেলা সদরের বাইরে সুখানপুকুর এলাকার ডাঃ আজিজার রহমানের নামে ৯ লিটার আরএস ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে। ঢাকায় যে পাঁচ শ’ ব্যারেল অথবা আরও বেশি আরএস আমদানি হয়েছে এগুলো কোথায় ব্যবহার হচ্ছে। এর উত্তর মেলেনি।

বগুড়া হোমিওপ্যাথ মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাঃ এসএম মিল্লাত হোসেন জানান, বগুড়া জেলায় ৪০০ হোমিও চিকিৎসক আছেন। ড্রাগ লাইসেন্স আছে ৫০ জনের। লাইসেন্স ছাড়াই অন্তত সাড়ে তিনশ’ হোমিও দোকানে স্পিরিট কিনে ব্যবহার করা হয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে। শিশিতে ভরা হয় আরএস গায়ে স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি হয়। নেশায় আসক্তদের কাছে যায় হাত ঘুরে। শহর ও শহরতলির অলিগলিতে পলিথিনে ও শিশিতে বিক্রি হয় আরএস মদ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জানায়, তারা হোমিও ল্যাবে আরএস আমদানির অনুমতিপত্র দেন। এরপর কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে, তা দেখার দায়িত্ব ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের।

সূত্র জানায়, বগুড়ায় দুই হাজার একশ’ জনের মদ সেবনের পারমিট (অনুমতি) রয়েছে। এর মধ্যে হরিজন ও ঋষি সম্প্রদায়ের এক হাজার ৫০ জন। অভিজাত শ্রেণীর ১০৫০ জনের।

পুলিশ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে পারুল হোমিও থেকে বিষাক্ত মদের চালান হয়েছে বেশি। মাদকের আলোচিত ব্যক্তি পারুল হোমিও ল্যাবের নুর মোহাম্মাদ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি পণ্যের একাধিক কারখানার মালিক। এসব ব্যবসায় অন্তত তিনশ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। -জনকন্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়