এএইচ রাফি: [২] ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজের চাচাতো বোনের বাড়িতে ডাকাতি করতে ডাকাত দলের সাথে চুক্তি করে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।
[৩] রোববার দুপুরে (৩১জানুয়ারি) চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় এবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে গ্রৃত অন্যতী আমির হোসেন (২৩)।
[৪] এর আগে আমির হোসেনকে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে জেলা শহরের কলেজপাড়া থেকে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানার পুলিশ।
[৫] আমির হোসেন জেলার নবীনগর থানার শ্রীরামপুরের নসু মিয়ার ছেলে। গতবছরের ২৮ ডিসেম্বর এই ডাকাতির ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দিদারকে গ্রেফতার করা হয়।
[৬] আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে আমির হোসেন জানায়, সদর উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দিদার আলম আমার সাথে তার চাচাতো বোনের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা করতে এক লাখ টাকায় চুক্তি করে। তবে এই টাকা আমির হোসেনকে ডাকাতির পর দেওয়ার কথা ছিল দিদারের। কিন্তু সে আর টাকা দেয়নি।
[৭] মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইশতিয়াক আহমেদ জানান, গত ৯ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাউতলিতে গ্যাসের লাইন চেক করার কথা বলে দিনে-দুপুরে প্রবাসী রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় বাড়ির ২২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৫০ হাজার টাকা ও চার লাখ টাকা মূল্যের একটি ঘড়ি সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায় ডাকাতের দল। ওই ঘটনায় জেলা শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
[৮] তিনি বলেন, এই ঘটনায় দিদার আলম নামে একজন জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দিদার কাউতুলী এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে। ডাকাতি হওয়া প্রবাসীর স্ত্রী দিদারের চাচাতো বোন। সেই সুবাদে দিদারের ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করতো।
[৯] পরিদর্শক ইশতিয়াক আহমেদ আরও বলেন, দিদারকে গ্রেফতার করা হলেও সে আদালতে জবানবন্দী দেয়নি। তবে দিদারের দোকানের স্টাফ ১২ বছরের জাহিদুল দিদারের জড়িত থাকার কথা বলে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। এই শিশুকে দিয়ে দিদার ডাকাতির সময় প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাত দলকে ব্যাটারি সরবরাহ করেন। ওই ব্যাটারি দিয়ে প্রবাসীর বাড়ির লকার খোলা হয়। তিনি বলেন, এই ঘটনায় শনিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রযুক্তির সহায়তায় আমির হোসেন নামের আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
[১০] দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহিদ হোসেনের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে আমির হোসেন।
[১১] আমির হোসেন তার জবানবন্দীতে জানায়, প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি করতে দিদার আলম তার সাথে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে। সেই টাকা ডাকাতির পর দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়াও ডাকাতির মালামাল ভাগবাটোয়ারা হওয়ার কথা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাউতুলী স্টেডিয়ামের কোনায় দিদার সহ ৭জন মিলিত হয়। বেলা দুইটার দিকে প্রবাসীর বাড়িতে প্রবেশ করে ছুড়ি-চাপাতি দিয়ে জিম্মি করে ডাকাতি করা হয়।
[১২] তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, এই ডাকাতির ঘটনায় ৭জন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ডাকাতির ঘটনায় প্রথমে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
[১৩] ইতিমধ্যে আমির হোসেন, দিদার আলম ও আলমগীর নামের তিনজনকে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরও শনাক্ত করা হয়েছে। মামলায় জড়িত সকল আসামিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হবে।
আপনার মতামত লিখুন :