শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ২৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০৭:৪৩ সকাল
আপডেট : ২৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০৭:৪৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র আ.লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী

আখিরুজ্জামান সোহান: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বিজয়ী হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী থেকে প্রায় ৩ লক্ষেরও অধিক ভোট পেয়েছেন তিনি।

নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনাসিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী অফিস থেকে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা করছেন।

২৮ জানুয়ারী রাত ১.৩০ পর্যন্ত ৭৩৩ কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী রেজাউল করিম চৌধুরী পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। প্রথমবারের মতো ইভিএমে অনুষ্ঠিত নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের ৭৩৫ টি কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নগরীতে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন। তবে, দুপুরে ইভিএম ভাঙচুর ও কেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টি হলে পাথরঘাটা ওয়ার্ডের দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

এদিকে, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও সকাল ৮ টা থেকে একটানা বিকেল ৪ টা পর্যন্ত সার্বিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। মূলত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা হয়েছে। কাউন্সিলরের বিরোধে সকালে পাহাড়তলী নয়াবাজারে একজন এবং বিকেলে আমবাগানে একজন নিহত হন। এছাড়া, আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপির এক প্রার্থীকে গোলযোগ সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। উত্তর পাহাড়তলী ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জসিমকে বিকেলে আটক করে পুলিশ। পাথরঘাটা ওয়ার্ডে কয়েকটি কেন্দ্রে মারামারি ও কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাঈল বালীকে দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে আটক করা হয়।
জানা যায়, নির্বাচনে মোট ২৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন। মেয়র পদে ৭ প্রার্থী হলেন : নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী।

সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২টি ওয়ার্ডে আজ ভোটগ্রহণ হয়নি। আলকরণ ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া পূর্ব বাকলিয়া ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. হারুনুর রশিদের সাথে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। অবশ্য এ দু’টি ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

আজ রেজাউল করিম চৌধুরীর জয়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ছয়টি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোট পাঁচ বার জয়ী হলেন। ১৯৯৪ সালে প্রথম মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আলহাজ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বিএনপির মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। সে সময়ে বিএনপি সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। এরপর ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মীর নাছিরকে পুনরায় হারিয়ে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে মহিউদ্দিন চৌধুরীর হ্যাটট্রিক বিজয় আসে ২০০৫ সালে। সেবারও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মীর নাছির। ২০১০ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরী হেরে যান তাঁরই এক সময়ের শিষ্য এবং পরপর তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত ওয়ার্ড কমিশনার এম মনজুর আলমের কাছে। সে সময়ে মনজুর আলম বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পঞ্চম পরিষদে ২০১৫ সালে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বিএনপি প্রার্থী এম মনজুর আলমকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয় গত বছর ৫ আগস্ট। নির্বাচন কমিশন ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে দলীয় মনোনয়ন পর্যন্ত সবই সম্পন্ন হয়েছিল। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালনের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে ৪ আগস্ট প্রশাসক নিযুক্ত করে সরকার। সুজন ৬ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এদিকে, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর নতুন করে ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয় ২৭ জানুয়ারি। গত ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। আজ ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের মেয়র এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চূড়ান্ত হলেন।
সূত্র- বাসস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়